সিলেট ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২০
প্রতিনিধি/জগন্নাথপুরঃঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ইদানিং সংবাদকর্মী পরিচয়ে গোলাম সারোয়ার সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের অত্যাচারে নিরীহ জনতা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে মহান সাংবাদিকতা পেশাকে করা হচ্ছে কলুষিত। সুস্থ ধারার সাংবাদিকরা পড়েছেন বিপাকে।
তথ্য প্রযুক্তির আশির্বাদে ইদানিং কপি সাংবাদিকতার প্রতিযোগিতা চলছে। এসব ব্যক্তিরা নিজেকে সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। করছে নিরীহ জনতাকে হয়রানী ও অত্যাচার। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সুস্থ ধারার সাংবাদিকতায়। যে কোন সময় হতে পারে জন বিস্ফোরণ। ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে গোলাম সারোয়ার। রাণীগঞ্জ বাজারে রয়েছে তার কম্পিউটারের দোকান। স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে সে নিজেকেও সংবাদকর্মী পরিচয় দিতে থাকে। কয়েক বছর আগেও সে একজন ভাল ছেলে বলে পরিচিত ছিল।
তবে ইদানিং সে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। গড়ে তুলেছে বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ নিরীহ মানুষকে হয়রানী ও নির্যাতনে বেপরোয়া হয়ে উঠে। যে কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
সরজমিনে আলমপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত হাজী নুরুল ইসলামের স্ত্রী প্রবাসী মিনারা বেগম বলেন, গোলাম সারোয়ার সম্পর্কে আমার স্বামীর ভাতিজা। দীর্ঘ ২০ বছর আমরা তাদেরকে ভরণপোষণ করেছি। আমাদের বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। আমার স্বামী তাদেরকে বাড়িতে ২৬ শতক জায়গা দান করেছেন। বর্তমানে উক্ত জায়গা কুশিয়ারা নদীতে ভেঙে গেছে।
গোলাম সারোয়ারকে আমরাই প্রতিষ্ঠিত করেছি। যখন যা চেয়েছে দিয়েছি। তাকে খুব ভালবাসতাম ও বিশ্বাস করতাম। তার কাছে আমাদের বাড়ির অনেক কাগজপত্র ছিল। কিন্তু আমাদের সরলতার সুযোগে নানাভাবে প্রতারণা করেছে। এসব কারণে ২০১১ সালে তাদেরকে আমরা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। এরপর থেকে তাদের সাথে আমাদের আর কোন যোগাযোগ নেই।
তবে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাড়িতে নতুন পাকা ঘর বানানোর জন্য আমি ও আমার পরিবারের লোকজন যুক্তরাজ্য থেকে বাড়িতে আসি। মৌজা বালিশ্রী, জেএল নং ২১২ সাবেক দাগ নং ৪৫৮৬, খতিয়ান নং ২০২ ও ৩০৩ এ আমার স্বামীর খরিদা দুই একর বাড়ি ও জমি রয়েছে। আমরা আমাদের নিজস্ব বাড়িতে ঘর বানাতে গেলে হঠাৎ করে পুলিশ পাঠিয়ে বাধা দেয় গোলাম সারোয়ার। বাধার কারণে ঘর বানাতে না পারায় ঘর বানানোর জন্য পূর্বে কেনা সিমেন্ট, ইট, বালু, রড সহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সারোয়ার আমার কাছে নগদ ৭ লাখ টাকা ও ১ কেদার জমি দাবি করে। না দেয়ায় আমি ও আমার প্রবাসী ছেলেকে আসামী করে থানায় মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। সারোয়ার ও তার লোকজনের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তাই সংবাদকর্মী পরিচয় দানকারী সারোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে ২৬ শতক জমি দান করেছিলাম।
যা বর্তমানে নদীতে আছে। তবে তার কাছে আমাদের কাগজপত্র থাকায় চলচাতুরি করে সে ৪৫ শতক জায়গার পর্চা নিয়ে মালিকানা দাবি করছে। যদিও আমরা উক্ত পর্চার বিরুদ্ধে ল্যান্ড ট্রাইবুনালে মামলা করেছি। আমাদের জায়গা ফিরে পেতে। এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও অভিযুক্ত গোলাম সারোয়ারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া রাণীগঞ্জ বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সংবাদকর্মী পরিচয়ে গোলাম সারোয়ার সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সে ও তার অপকর্মের সহযোগিরা বিভিন্ন ভাবে বাজারের ব্যবসায়ীদের হয়রানী করছে। তার যন্ত্রনায় বাজারের নিরীহ ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। নাম প্রকাশ না করে একাধিক ভূক্তভোগী নিরীহ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হলুদ সংবাদকর্মী সারোয়ার সিন্ডিকেটের কবল থেকে মুক্তি চাই। বিচার চাই।