সিলেট ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০২০
ডেস্ক রিপোর্টঃঃ
ভয়ংকর করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব ঠেকাতে নাগরিকদের ঘরে থাকার সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা পাত্তা দিচ্ছে না অনেকেই। ঘরে নিরাপদে অবস্থান না করে বরং প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে হরহামেশাই বাইরে বের হচ্ছেন নাগরিকরা।ছুটি ঘোষণার প্রথম দুই-এক দিন লোকজন ঘরে থাকলেও এখন রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় ঠিক আগের মতোই বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। কোথাও কোথাও রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেট কারের জটলাও সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ করোনার ভয়াবহ ঝুঁকি বুঝতে না পারায় এমন আচরণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বের বহু দেশ এভাবে প্রথমদিকে করোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব না দিয়ে এখন তার পরিণতি ভোগ করছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘরে থাকার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সামাজিক দূরত্বটা হলো—নিজের বাসায় থাকা, ভিড়ে না যাওয়া, এক জন আরেক জনকে স্পর্শ না করা।বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অন্যান্য দেশের মতো সরকার ২৬ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সব অফিস-আদালত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারাখানা, বাস-ট্রেন-লঞ্চ-বিমান বন্ধ করা হয়েছে। রেস্তোরাঁ, ক্লাব, থিয়েটার, সিনেমা, বিনোদন কেন্দ্র, শপিংমল এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং ওষুধ কেনার জন্য সীমিত চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে। নাগরিকদের ঘরমুখো করতে পুলিশ, প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। কিন্তু তার পরও পুরোপুরি নাগরিকদের ঘরমুখো করা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতার কারণে মূল সড়কে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে রাস্তায় বের হওয়া নাগরিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, সিএনজি চলাচল বেড়েছে। বিকালে অলিগলিতে জমায়েত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাস্তায় শিশুদের ক্রিকেট খেলতেও দেখা গেছে।বেলা ১১টার দিকে কল্যাণপুরে মাস্ক ছাড়া ছয় বছর বয়সি শিশুকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় আব্দুল হালিমকে (৫৫)। মাস্ক ছাড়া কেন বাইরে বের হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা হোক বা অন্য রোগবালাই হোক সবই আল্লাহর হাতে। তাই নাতিকে নিয়ে বাইরে বের হয়েছি।
অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরির বাইরে পেটের দায়ে আবার ঘর থেকে বের হচ্ছেন দুস্থ-গরিবরা। বিশেষ করে যাদের প্রতিদিনের আয়ের ওপর সংসার চলে সেই নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। তবে বেকার হয়ে যাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি খাদ্য ও অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তা এখনো অপ্রতুল। প্রান্তিক এই মানুষকে সহায়তা করার জন্য ঢাকার মতো অনেক স্থানে এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা। তারা নিজেদের মতো করে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মানিকনগরে স্থানীয়দের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।