নবীগঞ্জে সাংবাদকিদের উপর হামলা: চেয়ারম্যান সহ আসামীরা পলাতক

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২০

বুলবুল আহমদ/নবীগঞ্জঃঃ

 

সারা বিশ্ব জোরে চলছে করোনা ভাইরাসের নানান আতংক। ঘন্টা পর ঘন্টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহামারি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মরছে। এর জন্য যার যার দেশের সরকার ও প্রশাসন নিজ নিজ ঘরে থাকার আহবান জানান ও তাদের জীবিকা রক্ষার্থের নানা ধরনের খাদ্র্র সামগ্রী দিয়ে আসছেন জনগণকে।

 

এরই দ্বারাবাহিকাতায় বাংলাদেশের সরকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী কারামুক্ত বেগম খালেদা জিয়াার পক্ষ থেকে সহ দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও অসহায় লোকজনকে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে আসছেন। এরই দ্বারাবাহিকতায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায়ও দেওয়া হচ্ছে।

 

কিন্ত ঐ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী মুহিবুর রহমান হারুন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারী- বেসরকারী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের অনুদান, সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের হক যেমন- ৬০, ৬৫, ৭০,৭৫, ৮০, ৮৫, ৯০, ৯১,৯২ ও ৯৩ বছর বয়সের লোকজন বয়স্ক ও বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের টিপিন বক্স, চাল- ডাল, অসহায় হত দরিদ্র লোকজনের জন্য সরকারী নানা অনুদান আত্মসাৎতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জের কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, অন- লাইন চ্যানেল, স্থানীয়, জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পত্র পত্রিকা সহ যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সংবাদ প্রকাশ করে আসছিলেন। এতে সাংবাদিকদের উপর চেয়ারম্যান হারুন ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

 

তার বিরোদ্ধে আরো অনেক অনিয়ম দূর্নীতি, যেমন- বিভিন্ন কোম্পানীর কাছ থেকে চাঁদা দাবী ও ছিনতাই করানোর অভিযোগ ও সহ নানান প্রজেক্টের বানিজ্য সহ তার বিরোদ্ধে অহরহ অভিযোগের সংবাদ প্রকাশ করে আসছে সাংবাদিকরা। কিন্তু কলমের কালি, টিভি ও ফেইসবুকে ভূক্তভোগীদের কথাবার্তা সরাসরি প্রকাশ হলেও তার কাছে এটা অর্থহীন হয়ে ওঠে! কারণ- সে যেকোন পরিস্থির মোকাবেলা করতে পারে নানান কৌশলে টাকার বিনিময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আইনের ফাঁক ফুকুর দিয়ে বেরিয়ে এসে একের পর এক নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

তার বিরোদ্ধে গণ মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেই স্থানীয় সাংবাদিকদের নানান হুমকি, ধামকি সহ প্রকাশ্যে গালিগালাজ ও তার লাঠিয়াল বাহিনী ধারা হামলা মামলা করিয়ে তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার গ্রাম ও আউশকান্দি ইউনিয়নের যে লোকই তার বিরোদ্ধে শিশু থেকে যুবক ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা মূখ খুলে কথা বললেই সে তাদের বিরোদ্ধে অপরাপর লোকজন ধারা থানা পুলিশ ও আদালতে মামলা করিয়ে হয়রানী করে আসছে। এমনকি তার পরিষদের সকল ইউপি সদস্যদের টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে। এমনকি ২/৩জন মহিলা ইউপি সদস্যাদের মাসিক ভাতার টাকা ও প্রতিটি বরাদ্দের অর্থেক ভাগ যারা দেয়না তাদেরকে না দিয়ে যারা ভাগ দেয় তাদেরকে দেওয়া হয়।

 

তার এসব ন্যাক্কার জনক ঘটনায় আউশকান্দি ইউনিয়নের অর্ধিকাংশ ইউপি সদস্যরা এক হয়ে গণ স্বাক্ষর দিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। এবং তাও সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকরা। কিন্তু চেয়ারম্যানের ভয়ে অনেকেই মূখ খুলতে রাজি হয়েও হচ্ছেন না। তবে ২/৩জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করেন। কিন্তু কোন লাভ হয় নাই। সে তার অবস্থানে অটল রয়ে যায়। এতে এলাকার লোকজনের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দেয়। অনেকেই যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন নানা স্ট্যাডাস দেন এবং লাইভ ও করেন। এতে মুহুর্তের মধ্যে বিশ্বের আনাছে কানাছের মানুষের কাছে ছড়িয়ে যায় এ খবরটি।

 

তাই অনেক মানুষ দিন দিন শেখ হাসিনার ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির কারণে যোগাযোগ মাধ্যমকেই বেচে নিয়েছেন। তারা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশে অনিহা প্রকাশ করে অন- লাইন ও যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশ করেন। এতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানের অবহেলিত জনপদ, গবীর দুঃখি মানুষের সুখ- দুখ তুলে ধরেন যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। এরই দ্বারাবাহিকতায় গত ৩০শে মার্চ সন্ধা রাতে মাননীয় সরকারের ত্রাণ সামগ্রী গোটা কয়েকজনের মধ্যে বিতরন করেন চেয়ারম্যান হারুন। তাও ইউনিয়ন অফিস বা কারো ঘর- বাড়িতে গিয়ে নয় তার অরবিট হাসপাতাল ১০/১২জনকে খবর দিলে তারা একে একে এসে নিতে হয়েছে।

 

ঐদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণ করে রাত ১০টার দিকে নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল আউশকান্দিতে এসে অরবিট হাসপাতালের সামনে চেয়ারম্যান হারুন কয়েকজন হত দরিদ্র লোকজনকে তৈল, সাবান, আলু, পিয়াজ ও চাল বিতরন করেন। কিন্তু সন্ধা থেকে রাত মধ্য রাত পর্যন্ত ৮নং ওয়ার্ডের কয়েকজন লোকজনকে চেয়ারম্যান ত্রাণ বিতরন করেন।

 

আর তা প্রকাশ হয় বিভিন্ন পত্র- পত্রিকা ও যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। এতে কিন্তু ঐ ওয়ার্ডের মেম্বারকে দেখা যায়নি! এখানেও কিন্তু নানান রহস্যের ধানা বাদছে লোকজনের কাছে। সরকারের ত্রাণ থেকে অবহেলিত ৮নং ওয়ার্ডের লোকজন ও বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা তাদের ওয়ার্ড মেম্বার খালেদ আহমদ জজকে এ ত্রাণ বিতরনের বিষয় নিয়ে নানান প্রশ্নে মুখে পড়তে হয় বলে সূত্রে জানাযায়। সংসদ সদস্যের এ ত্রাণ বিতরণ যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের লাইভে নবীগঞ্জ উপজেলার চ্যানেল এস এর নবীগঞ্জ প্রতিনিধি বুলবুল আহমদ তা প্রকাশ করেন।

 

পরদিন সন্ধার সময় সাংবাদিক বুলবুল আহমদ স্থাণীয় আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারে গেলে শতাধীক লোকজন ভিড় জমান সাংবাদিক এর চারপাশে। তারা বলেন, রাতে দেখলাম এমপি সাহেব তৈল, সাবান, চাল, আলু পিয়াজ দিয়েছেন। আমরা তো তা পাইনি। আপনার ফেইসবুকের লাইভে আপনি আমাদের এ বিষয়টি সরকার ও প্রশাসনকে জানিয়ে দিন। এতে সাংবাদিক অপারগতা প্রকাশ করলেও তারা বলেন, আমরা বক্তব্য দিব আপনি লাইভ করেন। এতে সাংবাদিক বুলবুল লাইভে এসে তাদের কথা মতো একটি লাইভ করেন।

 

এবং তারা তাদের কথা বলেন এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে চেয়ারম্যান হারুন। লাইভে যারা বক্তব্য দিয়েছেন- তাদের বাড়িতে রাতের আধাঁরে গিয়ে তাদেরকে নানান হুমকি ধামকি দেন। এবং বলেন এই লাইভে যে বা যাহারা বক্তব্য দিয়েছেন তাদের বিরোদ্ধে আমি আইনি ব্যবস্থা নেব। বল তোমাদের কে বলেছে এসব বলার জন্য? দুটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে গিয়ে জ্বলেয়ে পুড়িয়ে খুন ও ধর্ষণ ও অপহরন করার নানান হুমকি দেয় এবং তাদের ইচ্ছা মতো চাল মাপান আর চেয়ারম্যানের সাথে থাকা ইমাদ তার ভিডিও করে।

 

এরপর দিন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই ভিডি গুলো দেখিয়ে বলে, এই দেখেন স্যার আমি দূনীতি করিনি। আমার বিরোদ্ধে সে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়টি ইউএনও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক এর কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করেন। পরে সরাসরি কথাবার্তা হয়। এবং সাংবাদিক বুলবুল আহমদ এর সাথে মোবাইল ফোন করে বিষয়টি অবগত করেন।

 

এরপর চেয়ারম্যান হারুন এর সাথে বিষয়টি নিয়ে স্বার্থ সাপেক্ষে পরদিন বিকালে সমাধানে কথা হয়। এর মধ্যে আরো কয়েকজন ভোক্তভূগীর কান্না জড়িত কন্ঠের একটি লাইভ যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচার করলেন চ্যানেল সিক্স এর নবীগঞ্জ প্রতিনিধি শাহ সুলতান আহমদ। এতে ঐ লাইভে কান্না জড়িত কন্ঠে দেশের প্রধান মন্ত্রী সহ দেশ- বিদেশের ধনাঢ্য ব্যাক্তিদের কাছে আর্থিক সাহায্যে জন্য কান্না কাঠি করেন। লাইভ দেখে অনেকেই কমেন্ট এর মাধ্যমে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। লাইভ শেষে লন্ডন থেকে একজন সাংবাদিক শাহ সুলতান আহমদকে বলে যারা লাইভে কথা বলেছে তাদের সাবাইকে আমি ২হাজার টাকার খাদ্র সামগ্রী দিতে চাচ্ছি। আপনার তাদেরকে বিকালে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন।

 

এসব কথা শুনে যে বা যাহারা লাইভে কথা বলেছিল। তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টাকালে হঠ্যাৎ করে ২০/২৫ জন লোক নিয়ে চেয়ারম্যান হারুন ও তার লোকজন আস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দ্যেশে সাংবাদিক শাহ সুলতান আহমদ উপর হামলা চালায়। ক্রিকেট খেলার ব্যাট ও স্টাম্প দিয়ে এলপাতারি হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এতে সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান ও বুলবুল আহমদ এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় সন্ত্রাসী হারুন ও তার লোকজন। পরে আশাপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অজ্ঞাণ অবস্থায় সাংবাদিকদের নবীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

সেখানে সাংবাদিক শাহ সুলতানের অবস্থার অবনতি দেখে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। অপরদিকে এ ঘটনায় বাজার এলাকার উপস্থিত লোকজন চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সাথে কথা বার্তার এক পর্যায়ে দাওয়া পাল্টা দাওয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান তার গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে তার গ্রামের মানুষকে গাড়ি যোগে লাঠি নিয়ে আবারে আসার জন্য বললে সবাই লাঠি সুটা নিয়ে বাজারে এসে উপস্থিত প্রতিবাদকারীদের ধাওয়ার করে।

 

এতে স্থানীয় এলাকার লোকজন ও বাজার ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে পুরো এলাকার হাজারো জনতা চেয়ারম্যান হারুন সহ তার লোকজনবে আউশকান্দি মধ্য বাজার থেকে ধাওয়া করলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায় অরবিট হাসপাতালে। সেখানে সাটার নামিয়ে তালা লাগিয়ে ৫তলা বিশিষ্ট অরবিটের উপর থেকে নিচের উত্তেজিত জনতাকে ইঁপাটকেল নিক্ষিপ করতে থাকে। এতে ১০/১২জন উত্তেজিত জনতার হাত, পা ও মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

 

এতে আরো উত্তেজনা চড়িয়ে পড়ে। মারামারির খবর পেয়ে নবীগঞ্জ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত জনতাকে ধাওয়া ও মারপিট করলে স্থানীয়রা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে পুলিশকে ধাওয়া করে স্থাণীয় হাজারো জনতা। এবং পুরো বাজার জুরো উত্তেজিত জনতা মিছিল দেন যে, চেয়ারম্যান চুর এর গালে গালে জুতা মারো তালে তালে, চাউল, তৈল, পিয়াজ চুর- তর দেখি কত দৌড়। চুর চেয়ারম্যান হারুনের পদত্যাগ চাই পদত্যাগ চাই। নইলে এবার রক্ষা নাই।

 

এরপর উত্তেজিত জনতা তার অরবিট হাসপাতালে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারভেজ আলম, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবীগঞ্জ থানা ওসি উপস্থিত হয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে নবীগঞ্জ হাসপাতালে গুরুত্ব আহত সাংবাদিকদের দেখতে ছুটে যান নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারন সম্পাদক, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল, নবীগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমান, দৈনিক লোকালয় বার্তার সম্পাদক সুহেল আহমদ, দৈনিক সময় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার, নবীগঞ্জের কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ সহ আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পাঠি ও বিভিন্ন সামাজিক সংঘটনের নেতৃবৃন্দরা।

 

এ অনাকাংখিত ঘটনার কারণে জরুরী এক সভার নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও সন্ত্রাস চেয়ারম্যান হারুন সহ অপরাপর অপরাধিদের গ্রেফতারের দাবী জানান। পরে এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনকে প্রধান আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান বাদি হয়ে দায়ের করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে রাতেই বিশেষ অভিযান চালায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।

 

রাত একটার দিকে চেয়ারম্যান হারুননের বাড়ি মিনাজপুর গ্রামে প্রবেশ কালেই পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে নদীতে পড়ে পালিয়ে যায় চেয়ারম্যান ও তার ভাই বাতিজারা। পরে নবীগঞ্জ থানার ওসি অপারেশন ও অন্যান্য অফিসার সহ কয়েক ডজন পুলিশ চেয়ারম্যানের পুরো বাড়ি ঘেরাও দিয়ে তার ঘরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালালে মহিলা ছাড়া কোন পুরুষকে না পেয়ে অপরাপর আসামীদের বাড়িতে তল্লাশি চালান। পুরো গ্রাম তল্লাশি করে শেষ রাত সাড়ে ৩টার দিকে মামলার ৬নং আসামী আউশকান্দি অরবিট হাসপাতালের ম্যানাজার মিনাজপুর গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র খালেদ মিয়া (৩০) এর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তারে ঘরের বাথরোম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

এ চিরনি অভিযানের খবরে চেয়ারম্যানের লাঠিয়াল বাহিনী নদীযোগে মৌলভীবাজার জেলার কেশবচর ও গুরারাই এলাকায় পালিয়ে যায়। এদিকে, রহস্যময় হলেও সত্য যে, ঘটনার দিন রাতে ৭১ টিভির একটি স্বাক্ষাতকারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনার বিষয়টি আমি সমাধানের লক্ষে সাংবাদিক, চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু যেদিন সাংবাদিকদের উপর হামলা হয় সেদিন আমাকে চেয়ারম্যান হারুন ফোন করে বলেন, আমার লোক এখন যাচ্ছে ঐ সাংবাদিকদের মারতে। তখন তিনি বলেন, যদি আপনারা তাদের উপর হামলা করেন তাহলে আমাদের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগীতা পাবেন না।

 

এর ২/৪ মিনিটের মধ্যে আবার খবর আসে তারা হামলা করে সাংবাদিকদের গুরুত্বর আহত করেছে। এ টকশো দেখে ও শুনের সচেতন মহলের লোকজনদের মধ্যে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে অভিযোক্ত চুর, বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্টের টাকা ছিনতাইকারী মূলহুতা ও সন্ত্রাসী হারুন ও তার লোকজন যারা বক্তব্য দেয়েছেন সেই অসহায় লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল মাপছে আর কথা বলছে এবং ইমাদ তার ভিডিও করে বিভিন্ন লোকজনের ফেইসবুক তেকে পোষ্ট করে। যা হাস্যকরা বটে। চুরকে এখন আর ধরতে হবে না।

 

তারা নিজেই নিজের অপরাধের চিত্র তুলে ধরছে। যা ঐ ভিডিও ও লিখা দেখলেই জ্ঞাণীরা বুঝতে পারবেন। এমনকি জন সম্মুখে সাংবাদিকদের জন্য নাকি হারুন ও তার বড় ভাই আতাউর রহমান বলে আমরা কোটি টাকা রেখেছি সাংবাদিকদের দেখে নেওযার জন্য। দেখি তদের কলম আর আমাদের টাকা। এসব কথাবার্তা, হামলা মামলা ও ১জন গ্রেফতারে আতংকের পাশাপাশি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকার লোকজনের মধ্যে। চেয়ারম্যান হারুন পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ ধরতে না পারায় প্রবাসী আলকাছ মিয়া সাংবাদিকদের কাছে মোবাইল ফোনে জানান যে, যদি কেউ হারুনের সন্ধান দেন বা ধরিয়ে দিতে পারেন। নগদে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষনা দেন।

 

এ ব্যাপারে ওসি অপারেশন আমিনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুরো গ্রাম ঘেরাও করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে প্রবেশকালেই ২/৩জন লোক আমাদের দেখেই নদীতে পড়ে পারিয়ে যায়। পরে তার ঘর তাল্লাশি চালিয়ে তাকে না পেয়ে অপরাপর আসামীর বাড়ি- ঘরে তল্লাশি চালিয়ে এক আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এবং চেয়ারম্যান সহ অপরাপর আসামীদের ধরতে আমাদের চিরনি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, অপরাধিরা যত বড়ই ক্ষমতাধর হোক না কেন কাউকেই ছাড় দেয়া যাবেনা।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী বাকি আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

June 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30