ওসমানীনগরে হিন্দুদের ত্রাণ দিতে নিষেধ করলেন পল্লীবিদুতের পরিচালক

প্রকাশিত: ৮:০৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২০

ওসমানীনগরে হিন্দুদের ত্রাণ দিতে নিষেধ করলেন পল্লীবিদুতের পরিচালক

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
সিলেটের ওসমানীনগরে হিন্দুদের ত্রান দিতে নিষেধ করার অভিযোগ উঠেছে অভিবক্ত বালাগঞ্জ ওসমানীনগর উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি বিএনপির সংক্রিয় কর্মী পল্লীবিদুৎ সমিতি সিলেট -১ এর পরিচালক কামরুল ইসালামের বিরুদ্ধে। এমন একটি ভিডিও গত দুই দিন ধরে ফেইসবুকে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠে। স্থানীয়রা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও করোনা প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। সবাইকে ঘরে থাকার নিদের্শ দিয়েছেন প্রশাসন। এমন সময় সরকারের পাশাপাশি গরীব অসহায়দের মধ্যে ত্রান বিতরণ করছেন বিত্তবানরা। করোনা ভাইরাসে দেশ যখন সংকটময় এমন সময় সাম্প্রদায়িক বিষয় তুলে আলোচনায় আসেন সিলেটের ওসমানীনগরে পল্লী বিদুৎ সমিতি সিলেট -১ এর পরিচালক কামরুল ইসলাম।

 

তিনি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর উপজেলার স্থানীয় একটি মসজিদে সবার সাথে ত্রান বিতরণ করেন। সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে জনসমাগম করে মসজিদে ত্রাণ বিতরণে নেতৃত্ব দেন ওই বিএনপি নেতা। এসময় জনসমাগম সৃষ্টি হলে এবং মসজিদে ত্রান বিতরণের খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু হিন্দু হতদরিদ্র মসজিদে আসেন। বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম তাদের উদ্যেশ্য করে বলেন হিন্দু কেউ এখানে আসবেন না। হিন্দু কারো নাম এই তালিকায় নেই তাই হিন্দু কাউকে ত্রান দেওয়া হবে না। ত্রান বিতরণের বিষয়টি ফেইসবুকে লাইভ করা হয় শাহ জামাল নামের এক জনের ফেইসবুক আইডি থেকে। সাথে সাথেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পরে। এবং নিন্দার ঝড় উঠে।

 

সুহাগ আহমদ নামের এক ব্যক্তি কমেন্ট করে বলেন, একজন বলছেন হিন্দু কেউ এখানে আসবে না হিন্দুদের নাম লিস্টে নাই আমার কথা হলো ওদের কি কারণে ত্রান দেওয়া হলো না ? একটু বুঝিয়ে বলেবেন দায় করে।

 

চুনু মিয়া নামের আরেকজন কমেন্ট করে বলেন, এটা কোন ধরণের সাহায্য মুসলসলমান পাবে হিন্দু পাবে না?

 

উপজেলা ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি পাপ্পু বহ্নি বলেন, ওই বিএনপি নেতা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির নির্বাচনের সময় সকল হিন্দুদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। সবাই তাকে ভোট দিয়ে পল্লী বিদুৎ পরিচালক পদে নির্বাচিত করলেন এখন করোনা ভাইরাসের কবলে সংকটময় পরিস্থিতিতে তিনি যে কথা বলেছেন আসলে সেটি নিন্দনিয় ব্যাপার।

 

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল দাশ বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসে মাহামারিতে সারা বিশ্ব সংকটময়। এই সময়ে কে হিন্দু কে মুসলিম কে বৌদ্ধ কে খ্রিষ্টান তা দেখার বিষয় নয়। মানুষ হিসাবে মানুষের পাশে দাড়ানো কর্তব্য। হিন্দুদের ত্রান দেওয়া হবে না এই বিষয়টি যে বলেছেন আমার মনে হয় তার মস্তিস্ক বিকৃত।

 

ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তার বলেন, মসজিদে জনসামগম করে ত্রান বিতরণ করা ঠিক হয়নি। এই সময় কে কোন জাতি তা দেখার বিষয় নয়। এ ব্যপারে দ্রুত জরিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ওসিকে বলা হয়েছে।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031