অক্টোবরে প্যাকেজের পুরো ঋণ ছাড় না হলে শাস্তি

প্রকাশিত: ৩:১৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০

অক্টোবরে প্যাকেজের পুরো ঋণ ছাড় না হলে শাস্তি
Spread the love

৬৬ Views

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

করোনার প্রভাব মোকাবেলায় ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সমুদয় ঋণ আগামী অক্টোবরের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক অনলাইন সভায় গভর্নর ফজলে কবির এ হুশিয়ারি দেন। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এমডি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

 

বৈঠকে গভর্নর অত্যন্ত কড়া ভাষায় ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, করোনার প্রভাব মোকাবেলায় সারা দেশে টাকার প্রবাহ বাড়াতে হবে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বহুমুখী প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর। তারা এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বৈঠকের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্রণোদনার আওতায় ঋণ বিতরণের হার অত্যন্ত কম হওয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যে কারা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারবেন না, এখনই বলেন। গভর্নরের কঠোর অবস্থান দেখে ব্যাংকগুলোর এমডিরা ওই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ করার প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্যাকেজের আওতায় ঋণ বিতরণের বিষয়গুলো এখন কঠোরভাবে তদারকি করা শুরু হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। কোনো অনিয়ম বা শৈথিল্য ধরা পড়লে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

করোনার প্রভাব মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এসব প্যাকেজ বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছিল ৩১ আগস্ট। এ সময়ের মধ্যেই প্যাকেজ থেকে নামমাত্র অর্থ বিতরণ করায় এর সময় আরও বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়। সূত্র জানায়, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে প্রথমে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। পরে এর আকার আরও আড়াই হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা করা হয়। এ তহবিলের পুরোটাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে উদ্যোক্তারা এ ঋণ পেয়েছেন।

 

বড় শিল্প ও সেবা খাতে চলতি মূলধনের জোগান দিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা দেয়া হয়। পরে এর আকার আরও ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ প্যাকেজ থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্যাকেজের প্রায় ৭১ শতাংশ অর্থ অনুমোদন করা হয়েছে। কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যে আগস্ট পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র সাড়ে ১৭ শতাংশ। এ খাতে ঋণ দিতে শুরু থেকেই অনাগ্রহ দেখাচ্ছিল ব্যাংকগুলো। এ কারণে এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে বড় ছাড় দেয়া হয়েছে।

 

কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতে ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। জুলাই পর্যন্ত এ তহবিল থেকে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ৪৯৭ কোটি টাকা। প্যাকেজ বাস্তবায়নের হার মাত্র ১০ শতাংশ। নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৯ শতাংশ সুদে এ ঋণ বিতরণ করার কথা। এ প্যাকেজ থেকে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ২৭৬ কোটি টাকা। প্যাকেজ বাস্তবায়নের হার মাত্র সাড়ে ৯ শতাংশ।

 

রফতানিকারকদের প্রাক-জাহাজীকরণের জন্য ঋণ দিতে ঘোষণা করা হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৩৫০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কোটি ডলার করা হয়েছে। এ দুটি প্যাকেজ থেকে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়া হচ্ছে।


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930