ছাতকে টায়ার কারখানার ভুমি নিয়ে দুপক্ষের মুখোমুখি : ইউএনও বরাবরে স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২

ছাতকে টায়ার কারখানার ভুমি নিয়ে দুপক্ষের মুখোমুখি : ইউএনও বরাবরে স্মারকলিপি
১৮৪ Views

প্রতিনিধি/ছাতকঃঃ
ছাতকে নিজের ভুমি চিহ্নিত না করে নতুন টায়ার কারখানা স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করায় ছাতকস্থ সিলেট পাল্প এন্ড পেপারমিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী এখন মুখোমুখী অবস্থান করছে। এ নিয়ে বড় ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশংকাও করছে সাধারন মানুষ। নিজের ভুমি চিহ্নিত না করে কারখানা স্থাপন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা এবং আইনী সহায়তা পাওয়ার দাবীতে রোববার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে শহরের বাঁশখালা গ্রামবাসী। একই সাথে স্বরাষ্ট্র সচিব, ভুমি সচিব, শিল্প সচিব, সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ-৫, বিভাগীয় কমিশনার সিলেট, জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ, মেয়র ছাতক পৌরসভা, অফিসার ইনচার্জ ছাতক থানা এবং প্রেসক্লাব সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ছাতককে পৃথক অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, লেবারপাড়া ও বাঁশখালা গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে পেপারমিল প্রতিষ্ঠার সময় বাঁশখালাসহ আশপাশের গ্রামের মানুষের বহুভুমি অধিগ্রহন করে তৎকালীন মিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অধিগ্রহনকৃত এসব ভুমি ওই সময়ে চিহ্নিতকরন ও সীমানা নির্ধারন করা হয়নি। পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ ভুমি মালিকদের ভুমি চিহ্নিত না করেই ২০০৪ সালে নিটল-নিলয় গ্রুপের কাছে মিল ও মিলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি লিজ প্রদান করে তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার। তখন বন্ধ মিলটি পুনরায় চালু করার শর্তে আব্দুল মাতলুব আহমেদের নিটল-নিলয় গ্রুপের কাছে দীর্ঘ মেয়াদে লিজ প্রদান করা হয় বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়। এলাকাবাসীর মতে লিজের সকল শর্ত ভঙ্গের পাশাপাশি বর্তমানে এরাকাবাসীর মারাত্মক ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছেন নিটল-নিলয় গ্রুপ।

 

 

নতুন টায়ার কারখানা স্থাপনের নামে প্রভাবশালীদের সহায়তায় মিল কর্তৃপক্ষ এখানের সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকানা ভুমি কৌশলে জবর দখলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মুল পেপার মিলের বাইরে বাঁশখালা গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে যেখানে টায়ার খারখানা স্থাপনের প্রক্রিয়া করছে মিল কর্তৃপক্ষ, সেখানে রয়েছে একটি প্রাইমারী স্কুল, একটি মাদ্রাসা, একটি মন্দির, একটি মসজিদ, ও মসজিদের পুকুর, কবরস্থান ও একটি খেলার মাঠ। এলাকার মানুষ এগুলো যুগ-যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে গ্রামবাসীর কল্যানে। এদিকে ৮ ফেব্রয়ারী ওই স্থানে নতুন টায়ার কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে পুলিশ প্রহরায় প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে নিটল-নিলয় গ্রুপ। কোন রকম ভুমি চিহ্নিতকরন কার্যক্রম ছাড়াই একতরফাভাবে গ্রামের অভ্যন্তরে টায়ার কারখানা স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করলে প্রতিবাদী হয়ে উঠে গ্রামবাসী। মুহুর্তের মধ্যে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রতিবাদী মানুষদের শান্ত করতে ভুমিকা রাখেন, ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

 

এলাকাবাসীর দাবী এখানে নতুন কারখানা স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ রেখে আগে ভুমি চিহ্নিত করতে হবে। এখানের স্কুল, মাদ্রাসা, মন্দির, মসজিদ, মসজিদের পুকুর, কবরস্থান ও খেলার মাঠ রক্ষা করে কারখানা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিতে হবে। পরিবেশ দূষন বন্ধে নিশ্চয়তা দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ ভুমি মালিকদের আর্থিক সহায়তা এবং স্থানীয়দের চাকুরী নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান সমন্বয়ে গ্রামবাসীর সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা করতে হবে। অন্যতায় সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আশংকা রয়েছে। স্মারকলিপি প্রদানকালে গ্রামবাসীর পক্ষে শামছু মিয়া, আব্দুস ছাত্তার মেম্বার, বুরহান উদ্দিন, সাবেক কমিশনার সামছু মিয়া, আব্দুল মতিন, জাকির হোসেন, আব্দুল্লাহ মিয়া, আব্দুর রশিদ সহ লোকজন উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান স্মারকলিপি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।

Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031