জগন্নাথপুরে ধীরে কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ৮:৩৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২২

জগন্নাথপুরে ধীরে কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
২৯৬ Views

কলি বেগম/জগন্নাথপুরঃঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বন্যার শুরুতে পানি বেড়েছে প্রতিদিন ফুট হিসেবে। এখন পানি কমছে ইঞ্চি হিসেবে। এখনো উপজেলা পরিষদ এলাকায় পানি রয়েছে। নিন্মাঞ্চলের অবস্থা আরো ভয়াবহ। ধীরে পানি কমায় শঙ্কিত আশ্রিত জনতা। গত ১২ দিন ধরে মানুষ বাড়ি ছাড়া। বন্যায় বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও উঁচু বাড়িতে।

 

এখন নিজ বাড়ি ফিরতে মানুষ ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। নিজগৃহ ছাড়া কোথাও মনের শান্তি পাওয়া যায় না। সম্ভবতো এই কারণে বাবুই পাখি চড়াইকে বলেছিল “পাকা হোক তবু ভাই পরেরও বাসা, নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা”। এই ১২ দিনের আশ্রিত জীবনে মানুষ তা হাড়েহাড়ে বুঝতে পেরেছেন। শত ইচ্ছা থাকা সত্বেও মানুষ বাড়ি ফিরতে পারছেন না। এখনো বাড়িঘরে পানি থাকায় বাড়ি ফেরা সম্ভব হচ্ছে না।

 

এর মধ্যে যাদের বাড়িঘর পাকা-আধাপাকা ছিল, তাদের মধ্যে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। তবে যাদের কাঁচা ঘরবাড়ি তারা এখনো বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বাড়ি থেকে পানি নামলেও কাঁদামাটিতে পরিণত হয়েছে ঘর। ঘর না শুকালে বাড়িতে বসবাস করা যাবে না। বাড়ির চারদিকে এখনো রয়েছে পানি। আবার আশ্রয় কেন্দ্রে বেশিদিন থাকায় বিরক্তির কারণও রয়েছে। যে কারণে মানুষ বাড়ি ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেকে আবার ঘরে পানি থাকা সত্বেও চৌকির উপর বসবাস করা শুরু করে দিয়েছেন।

 

এছাড়া অনেকের বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রেখে আসা মালামাল এখন বাড়ি ফিরে গিয়ে পাচ্ছেন না। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার সুযোগে চোরেরা তাদের বাড়ির মালামাল নিয়ে গেছে। ২৮ জুন মঙ্গলবার জগন্নাথপুর পৌর এলাকার শেরপুর গ্রামের ছনর উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জানান, আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে দেখি ঘরে দরজা খোলা। ঘরে থাকা প্রায় সকল মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এ যেন “মরার উপর খাড়ার ঘা”।

 

এছাড়া অনেকের পুরনো কাঁচা ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে অনেকের বাড়িঘর ভেঙে ও ধসে পড়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেই সাথে রয়েছে জোঁক ও বিষধর সাপের আতঙ্ক।

 

এদিকে-এখনো রাস্তাঘাটে কমবেশি পানি রয়েছে। পানির কারণে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। পাকা রাস্তায় কোন রকমে চলাচল করা গেলেও মাটির কাঁচা রাস্তাগুলো কাঁদামাটিতে পরিণত হওয়ায় চলাচল করা যাচ্ছে না। এতে মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে পানি বাহিত রোগ ও রোগীর সংখ্যা।

 

জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মধু সুধন ধর জানান, সাপের বিষ প্রতিষেধক ওষুধ আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত আছে। তবে পানি বাহিত রোগ বাড়লেও মহামারি নয়। প্রতিদিন ১০/১২ রোগী আসেন। অতি গুরুত্বের সাথে রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।

Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031