৮৭ বাড়ি ও ১৯ গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২৩

৮৭ বাড়ি ও ১৯ গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত
Spread the love

১৫ Views
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃঃ
এই সপ্তাহে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানের রাস্তায় মুসলমানদের চালানো তাণ্ডবে খ্রিস্টানদের ৮০টিরও বেশি বাড়ি ও ১৯টি গির্জা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে শুক্রবার সে দেশের একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

বিক্ষুব্ধ জনগণ পাঞ্জাব প্রদেশের জারানওয়ালা শহরের একটি পাড়ায় বুধবার তাণ্ডব চালালে এবং বাড়িঘর ও গীর্জায় আগুন দিলে শত শত খ্রিস্টান সংখ্যালঘু তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পাঞ্জাব পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার বলেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ ধরনের সহিংসতা কখনোই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।

উসমান আনোয়ার বলেছেন, তিনি ‘নির্যাতনের অভিযোগ এড়াতে’ কোরআন অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই খ্রিস্টানকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, তারা তাণ্ডবের সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত ১২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাণ্ডবে খ্রিস্টান পাড়ায় ৮৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ঘটনার দিন শত শত বিক্ষুব্ধ জনতাকে মুসলিম ধর্মগুরুরা প্রতিবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

 

ধর্মগুরুরা অভিযোগের খবর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মসজিদের লাউডস্পিকার ব্যবহার করেছিলেন। তবে খ্রিস্টান অধ্যুষিত অঞ্চলে বসবাসকারী মুসলমানরা তাদের প্রতিবেশীদের আশ্রয় দিয়েছিল। খ্রিস্টানদের হামলার শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে তাদের বাড়ির দরজায় কোরআনের আয়াত লাগিয়ে দিয়েছিল। উভয় ধর্মের বাসিন্দারা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
 

এদিকে শুক্রবার খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করার জন্য পাঞ্জাব প্রদেশজুড়ে তিন হাজার ২০০টি গীর্জায় পুলিশ সদস্যরা পাহারা দিয়েছেন বলে বাহিনীর প্রাদেশিক প্রধান জানিয়েছেন। তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনের জন্য রবিবার জরানওয়ালা ভ্রমণ করবেন।

এ ছাড়াও সরকার ও ধর্মীয় নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহত্তর সুরক্ষার আহ্বান জানিয়ে খ্রিস্টান দলগুলো দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি ছোট বিক্ষোভ করেছে।

 

করাচির আর্চবিশপ বেনি ট্র্যাভিস একটি ছোট সমাবেশে বলেছেন, ‘আমরা আশা করি এই প্রতিবাদের মাধ্যমে সরকারকে অবশ্যই বুঝতে হবে, এই সমস্যাটি কঠোরভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং যারা ধ্বংস করেছে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।

 

পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভি খ্রিস্টানদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তাদের ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রাদেশিক সরকার সহিংসতার তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে।

 

খ্রিস্টানরা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় দুই শতাংশ। তারা পাকিস্তানি সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের অন্তর্গত এবং প্রায়শই ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগের কারণে লক্ষ্যবস্তু হয়।

 

ধর্ম অবমাননা হলো গভীর রক্ষণশীল, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে একটি উসকানিমূলক অভিযোগ, যেখানে ইসলাম ধর্ম ও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অপমান করার অপ্রমাণিত অভিযোগও সতর্ককারীদের হাতে মৃত্যুকে উসকে দিতে পারে। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দেশটিতে রাজনীতিবিদদের হত্যা করা হয়েছে, আইনজীবীদের হত্যা করা হয়েছে এবং ছাত্রদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

 

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামলার সংখ্যা এবং আকার বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

October 2023
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031