তিন বছরেও হয় না ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রকাশিত: ৭:১৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২৩

তিন বছরেও হয় না ড্রাইভিং লাইসেন্স
Spread the love

১৯ Views

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

মো. মাইনুদ্দীন কেরানীগঞ্জ এলাকার একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ের কাজে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাকে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হয়। কেরানীগঞ্জে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ইকুরিয়া কার্যালয়ে তিন বছর ধরে ঘুরেও পাচ্ছেন না ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড। মাইনুদ্দীন জানালেন, এই তিন বছরে কতবার যে তিনি ইকুরিয়া কার্যালয়ে যাওয়া-আসা করেছেন গুনে বলা যাবে না। যখনই আসেন, তখন নতুন তারিখ দেওয়া হয়। সব রকম পরীক্ষা ও টাকা দেওয়ার পরেও ড্রাইভিং লাইসেন্সের সেই কাক্সিক্ষত স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন না।

 

 

 

তিনি বলেন, লাইসেন্স না থাকায় রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ অনেক সমস্যা করে। অনুমতির যে কাগজ দেওয়া হয়েছে, সেটাও পুরনো হয়ে গেছে, নষ্ট হওয়ার পথে। ঠিক একই সমস্যা নিয়ে এই সার্কেল অফিসে এসেছিলেন যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. রাকিব। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় চলার সময় নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য। আর যে কাগজ দেওয়া হয়েছে, সেটা অনেক দিন ভাঁজে থাকায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা এখন। সরকার কত কিছু ডিজিটাল সেবা করল। কিন্তু আমরা এখনো সেভাবে তার সুফল পাচ্ছি না।’ শুধু ইকুরিয়া কার্যালয় নয়, দেশে বিআরটিএর বেশিরভাগ সার্কেল অফিসে সেবা নিতে এসে নানান হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাপ্রার্থীদের।

 

 

জানা যায়, প্রায় ৩০ হাজার আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় তথ্য বিআরটিএর কাছে নেই। আবার অনেক সময় সার্ভার সমস্যায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণেও দুর্ভোগ বাড়ে সেবাগ্রহীতাদের। বিআরটিএর ঢাকা মেট্রো ৩ সার্কেল উত্তরা কার্যালয়ে গাড়ির মালিকানার সমস্যা নিয়ে তিন বছর ধরে ঘোরাঘুরি করেও সমাধান পাচ্ছেন না উওরার বাসিন্দা মো. শিহাব উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘পুরনো একটি মোটরসাইকেল নিয়েছিলাম এক বন্ধুর কাছ থেকে। কিন্তু নানা জটিলতার জন্য নাকি এখনো মালিকানা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তারা (কর্তৃপক্ষ) বলছেন, অনেকগুলো ফাইল জমা আছে। যার জন্য কাজ শেষ হতে সময় লাগছে। কিন্তু কবে এই সমাধান হবে, সেটা কেউ বলতে পারছেন না।’

 

 

 

এই সার্কেলে আরেক ভুক্তভোগী মো. জামান বলেন, ‘চার বছর আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স করা হয়েছিল। কিন্তু স্মার্ট কার্ড এখনো পাওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষের জন্য আমাদের এই ভোগান্তি হচ্ছে।’ এগুলো দেখার কেউ নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিআরটিএর অনেক কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা করে থাকে। তাদের এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির জন্য অনেকে ঠিকমতো ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না। আর বিআরটিএর সার্ভারেও অনেক সময় সমস্যা দেখা যায়। শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্স নয়, মালিকানা বদল করার ক্ষেত্রেও নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবাগ্রহীতাদের।

 

 

 

তিনি আরও বলেন, বিআরটিএর ইমার্জেন্সি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনেকের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। অনেকের ভিসা পেয়েও এই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বিদেশে যেতে পারছেন না। তাই বিআরটিএর মতো সেবাদান প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তা না হলে বছরের পর বছর ভোগান্তিতে পড়তে হবে সেবাগ্রহীতাদের। বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই রাব্বানী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের যে সমস্যাগুলো আছে, সেটি সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে। আর মালিকানায় অনেক ক্ষেত্রে যার নামে প্রথম মোটরসাইকেলের মালিকানা থাকে সেই ব্যক্তিকে পাওয়া যায় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে স্বাক্ষর সমস্যার জটিলতায় দেরি হয় মালিকানা বদলানোর ক্ষেত্রে। যার জন্য অনেক সময় লেগে যায়। তবে সবার সব ধরনের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করেন তারা।


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

October 2023
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031