যে নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৮:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০

যে নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ নির্দেশনা দিয়েছেন।

আজ সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা পাঠ করেন।

নির্দেশনাগুলো হলো :

১. আগামী ২৬ মার্চ যে সরকারি ছুটি তার সাথে মিলিয়ে ২৭, ২৮ দুদিন যে সাপ্তাহিক ছুটি আছে এর সাথে সরকার ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ২০২০ সালের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। তার সঙ্গে ৩ ও ৪ এপ্রিলের সাপ্তাহিক ছুটিও এই বন্ধের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি যেসব সেবা আছে তার জন্য এগুলো প্রযোজ্য হবে না। করোনাভাইরাস বিস্তৃতির জন্য সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনসাধারণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ ক্রয় ও চিকিৎসা গ্রহণ ইত্যাদি) কোনোভাবেই ঘরের বাইরে না আসার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

 

২. এ সময়ে যদি কোনো অফিস-আদালতে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে হয় তাহলে তাদের অনলাইনে সম্পাদন করতে হবে। সরকারি অফিস সময়ের মধ্যে যারা প্রয়োজন মনে করবে তারাই শুধু অফিস খোলা রাখবে।

 

৩. গণপরিবহন চলাচল সীমিত থাকবে। জনসাধারণকে যথাসম্ভব গণপরিবহন পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে গণপরিবহন ব্যবহার করবে তাদের অবশ্যই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেই গণপরিবহন ব্যবহার করতে হবে। গাড়িচালক ও সহকারীদের অবশ্যই গ্লাভস এবং মাস্ক পরাসহ পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

৪. জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

 

৫. ২৪ মার্চ থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সশস্ত্র বাহিনী জেলা প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত থাকবে। দেশের ৬৪ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের স্ব স্ব জেলার প্রয়োজন অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর জেলা কমান্ডারকে রিকুইজিশন দেবে।

 

৬. করোনাভাইরাসের কারণে নিম্নের কোনো ব্যক্তি যদি স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয় তাহলে সরকারের যে ঘরে ফেরার কর্মসূচি রয়েছে, সে কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গিয়ে আয় বৃদ্ধির সুযোগ পাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।

 

৭. ভাসানচরে এক লাখ লোকের আবাসন ও জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এ সময় যদি দরিদ্র কোনো ব্যক্তি ভাসানচরে যেতে চান তাহলে তারা যেতে পারবেন। জেলা প্রশাসকদেরকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

 

৮. করোনাভাইরাসজনিত কার্যক্রম বাস্তবায়নের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় অন্নসংস্থানের অসুবিধা নিরসনের জন্য জেলা প্রশাসকদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এ সহায়তা প্রদান করা হবে।

 

৯. প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০০ জন চিকিৎসকের তালিকা তৈরি ও তাদের প্রস্তুত রাখবে। যাতে করে তাদের করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রয়োজনে কাজে লাগানো যায়।

 

১০. সব ধরনের সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাগম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে অসুস্থ জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মসজিদে না যাওয়ার জন্য বারবার নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও সম্প্রতি মিরপুরে একজন বৃদ্ধ অসুস্থ অবস্থায় মসজিদে যান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি পরে মৃত্যুবরণ করেন। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের প্রতি অসুস্থ অবস্থায় মসজিদে নামাজ আদায় করতে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

Spread the love

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031