সিলেট ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০
কলি বেগম/জগন্নাথপুরঃঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়লেও কেউ মানছে না লকডাউন। এতে সচেতন মহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও অধিকাংশ মানুষ কর্ণপাত করছে না। তারা যেন দেখেও অন্ধ হয়ে গেছে। তারা যেন শুনেও কালা হয়ে গেছে। যার খেশারত দিতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও শিশু সহ সাধারণ মানুষকে।
যে কারণে দিনে দিনে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বিগত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৩ মাসে জগন্নাথপুরে মাত্র ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তবে জুন মাসে এসে মাত্র ২৮ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জগন্নাথপুর পৌরসভা ও উপজেলার সৈয়দপুর-শাহরপাড়া ইউনিয়নকে সরকারি ভাবে রেড জোন ঘোষণা করা হয়।
প্রশাসন রেড জোন এলাকাকে শর্ত সাপেক্ষে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকবে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও খোলা থাকবে ওষুধের দোকান। অবশ্যই মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউন এলাকায় চলাচল করতে পারবে না কোন গণপরিবহন ও নৌ পরিবহন। অথচ সব কিছু যেন উল্টো হয়ে গেছে।
জগন্নাথপুর সদর বাজার সহ উপজেলার সকল হাট-বাজারে সব ধরণের দোকানপাট খোলা থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত অনেক দোকান খোলা থাকতে দেখা যায়। হাট-বাজারে বেড়েছে লোক সমাগম। অবাধে চলছে যানবাহন ও নৌ পরিবহন। কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন না। তাদের জিজ্ঞেস করলে বলেন মাস্ক পকেটে আছে। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে সনাক্ত হয়ে যারা হোম আইসোলেশনে বা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও তারা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশে বিধি নিষেধ থাকায় মানুষ রোগীদের চিনতে পারছেন না।
শুধু যাত্রীবাহী মিনিবাস ছাড়া সব ধরণের যানবাহন ও নৌ পরিবহন চলাচল করছে। বরং এখন আরো ভাড়া বেড়েছে। মিনিবাস থাকলে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে জগন্নাথপুর থেকে সিলেট ও জগন্নাথপুর থেকে সুনামগঞ্জ যাতায়াত করা গেলেও এখন গুনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। করা হয় জরিমানা ও সতর্ক। তাতেও কাজ হচ্ছে না। বেহায়া মানুষগুলো যেন শুধরাতে চায় না। বরং হুমড়ি খেয়ে পড়ে। প্রশাসনের সাথে দোকানি, গাড়ি চালক ও পথচারীরা রীতিমতো কানামাছি খেলছে। প্রশাসন দেখলেই লুকিয়ে পড়ে। প্রশাসন চলে গেলে আবার যেই লাউ সেই কদু। এতে বারবার লজ্জিত হচ্ছে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সচেতন মহলকে।
যেমন প্রিয়া তার অন্য অঞ্চলে থাকা প্রিয়কে ফোনে বলছে এখন আমাদের বাড়িতে আসতে পারবে না। কারণ লকডাউন আছে। এ সময় প্রিয় তার পেছন থেকে হাসতে হাসতে বলছে “সখি লকডাউন কারে কয়”। তখন প্রিয়া চমকে গিয়ে বলে তুমি আসলে কিভাবে? উত্তরে প্রিয় জানায় গাড়ি ভাড়া বেশি দিতে হয়েছে। আর কিছু না।
এরকই এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলে সরি বন্ধু রাতে দোকানপাট বন্ধ তাই চা খাওয়াতে পারবো না। উত্তরে বন্ধুটি বলল তুই বড় ক্ষিপ্টে। চা খাওয়াবি না বলে লকডাউনের অজুহাত দেখাচ্ছিস। এই দেখ কত চায়ের দোকান খোলা। ঠিক এরকই সচেতন মানুষকে প্রতিনিয়ত অন্যের কাছে লজ্জা পেতে হয়। ২৮ জুন রোববার সচেতন মহলের অনেকে এভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।