সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
অন্তরা চক্রবর্তীঃঃ
বিশেষ করে সিলেট এলাকার প্রবাসীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় খাবার শুঁটকি। ফলে দিন দিন সিলেটে বেড়েই চলছে শুটকির কদর। সিলেটের প্রত্যান্ত অঞ্চলে এখন বানিজ্যিক ভাবে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে শুঁটকি। সিলেটের বানানো এই শুঁটকি দেশের বাজারেই নয় চলে যাচ্ছে ব্রিটেন, আমেরিকা ও সৌদি আরব, ভারতসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে।
বাঙালীর প্রদান খাবার গুলোর মধ্যে অন্যতম একটির নাম হল শুটকি। রুচি পরিবর্তনশীল গুনগিুনদের দিক থেকে শুঁটকি মাছকেই সবাই পছন্দ করে থাকেন। শুটকি মাছ বাঙালির কাছে অনেকটািই পছন্দের। বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাছেও সিলেটের শুটকি মাছই তাদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম। শুটকি মাছের গন্ধের সাথে স্বাদও আলাদা যা সবার পছন্দের।
অগ্রহায়ন থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত এই চার মাস শুটকি তৈরীর ভরা মৌসুম। এই স য়ে বাজারে মাছের মূল্য কম থাকায়, বেশি পরিমাণে শুঁটকি তৈরি সম্ভব হয়। শুটকি মাছের শুটকি ভর্তা, বা ভুনা করলে অনেক স্বাদও মিলে এবং বেশি ভাত খাওয়া যায়। শুটকি মাছ সংরক্ষণ এবং রান্না দুই সুবিধা থাকায় তাজা মাছের তুলনায় বর্তমানে শুঁটকির বিক্রি বেড়েছে উল্যেখযোগ্য হারে। এছাড়া শুঁটকিতে উচ্চমাত্রার আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন ‘ডি’ ও কোলেস্টেরল রয়েছে। শুঁটকি কম-বেশি সবারই প্রিয়।
সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বিশ্বনাথ, ও জালালাবাদ এলাকার মধ্যবর্তী মাহতাবপুরের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে শুঁটকির প্রায় চল্লিশটি ডাঙ্গি রয়েছে। এরা খাঁচার ওপর মাছ শুকিয়ে এখন শুটকি তৈরি করছে। আর শুটকি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে ২ থেকে ৩শত নারী-পুরুষ। মাহতাবপুরের প্রায় তিন শতাধীক নারী ও পুরুষ শ্রমিক শুটকির জন্য মাছ কাটা এবং ধোঁয়ার কাজ করেন। বিনিময়ে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা মজুরি পান ১৩০-১৫০টাকা। এসব কাটা মাছে লবন ছিটিয়ে ৩/৪ ঘন্টা রেখে রোদে শুকানোর জন্য প্রথমে চাচঁ বিছিয়ে মাটিতে এবং কিছু শুকানোর পর মাঁচায় দেওয়া হয়। প্রায় পাচঁ থেকে ছয়দিন শুকানোর পর, টিল মেরে প্রক্রিয়াজাত করে শুটকি তৈরি করা হয়। এখানে পুঁটি, টেংরা, বাইম, চিংড়ি, চাঁন্দা ও কাইখ্যা এইসব প্রজাতির মাছের শুটকি করা হয়।
তাদের এ শুটকি গুলো ব্রাম্মণবাড়িয়া বা ঢাকার কিছু লোক পাইকারি ধরে ক্রয় করে নেন, এরা আবার এগুলো ভারতে বিক্রি করেন, তাদের বিক্রিত শুটকিগুলো সব জায়গায় বেশ জনপ্রিয়, তাই তারা এ মৌসুমে দুই থেকে তিন কোটি টাকার শুটকি পাইকারী দরে বিক্রি করে থাকেন বলে জানান উৎপাদনকারীরা।