নবীগঞ্জে ভিজিডির চালসহ জনতার হাতে আটক চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২০

নবীগঞ্জে ভিজিডির চালসহ জনতার হাতে আটক চেয়ারম্যান

বুলবুল আহমদ/ নবীগঞ্জ::

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা তড়িগড়ি করে সরকারী আত্মসাৎকৃত ভিজিডির চাল বুঝাই ট্রাক নিয়ে ইউনিয়ন অফিসে ঢোকার সময় আটক করেছেন স্থানীয় জনতা। গতকাল বুধবার ভোরে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় কয়েক শতাধিক লোকজন চেয়ারম্যান মুসার বিরুদ্বে নানা শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে রাস্তায় বসে পড়ে। প্রায় একঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ চলে।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল, নবীগঞ্জ থানার ওসি অপারেশন মোঃ আজিজুর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ সময় উত্তেজিত জনতাকে নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জনতার উদ্দ্যেশে বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে অচিরেই হবে।

 

এ ঘটনায় সুষ্ট তদন্ত ও ব্যবস্থাপনার জন্য হবিগঞ্জ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম ইউপি অফিস পরিদর্শন করেছেন। শেষে ওই চাল সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরন করা হয়। এ নিয়ে নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসার বিরুদ্ধে গত ১৯ এপ্রিল ভিজিডির চাল ও মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সমরগাও গ্রামের শরিয়ত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি। এর পর তড়িগড়ি করে চেয়ারম্যান মুসা পরদিন ২০ এপ্রিল খাদ্য গুদাম থেকে এপ্রিল মাসের চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের চাল হিসেবে বিতরন করেন।

 

খাদ্য গুদাম সুত্র জানাযায়, প্রতি মাসে মাসে চেয়ারম্যান চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। এখন প্রশ্ন আসে চলতি এপ্রিল মাসের চাল গেল কোথায়? এই উদ্ধোদ্ব পরিস্থিতিতে সুচতুর চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ট্রাক ভর্তি চাল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশকালে জনতা কাছে আটক করে।

 

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত মার্চ মাসের ভিজিডির চাল সুবিধাভোগীরা পাননি। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় চাল চুরির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। উক্ত সংবাদটি ঘটনাটি স্থানীয়, জাতীয় ও অন- লাইন পত্র/পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে দেশে- বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফলে সুচতুর চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা এপ্রিল মাসের ভিজিডির চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের আত্মসাতকৃত ভিজিডির চালের পরিবর্তে ওই চাল (এপ্রিল মাসের) বিতরন করেন। এতে আরো আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনার ঝড় উঠে। এই অবস্থায় গতকাল বুধবার বিভিন্ন স্থান থেকে চাল ক্রয় করে আত্মসাতকৃত চাল বিতরন করে দায়মুক্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু জনতার কাছে শেষ রক্ষাও হলোনা চেয়ারম্যান মুসার!

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অতিতে ও আমরা ২/৩ মাসের চাউল এক সাথে বিতরন করেছি। এবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারনে চাল বিতরন করতে দেরি হয়েছে। আমি দীর্ঘ দিন নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ছিলাম ও উল্লেখিত ইউনিয়নের ৩ বারের নিবার্চিত চেয়ারম্যান। আজ যে গুজব চড়ানো হয়েছে আমার বিরুদ্ধে তা আওয়ামীলীগের কিছু নামদারি বিএনপি জামাত কর্মীরা আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের গুজব সৃষ্টি করে আমার মান সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

 

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অলক বৈষ্ণম জানান, গত মার্চ মাসের চাউল ইউপি চেয়ারম্যান মার্চ মাসেই উত্তোলন করেছেন এবং এপ্রিল মাসের চাউল তিনি গত ২০ তারিখ উত্তোলন কওে নিয়ে গেছেন।

 

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, ভিজিডির চাল নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠে আমরা এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তবে, তিনি এখানে ভিজিডির চাল বিতরণ করুক বা না করুক সে একটি অনিয়ম করেছে সরকারীভাবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

Spread the love

আর্কাইভ

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031