সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
বিলীন হচ্ছে কমলগঞ্জের কামারছড়ার সামাজিক বনায়ন
সালাহ্উদ্দিন শুভ/কমলগঞ্জঃঃ
কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনরেঞ্জের অধীনস্থ কামারছড়া বনবিট। কামারছড়া বনবিটের দুর্গম এলাকায় বনের টিলায় গড়ে উঠা সামাজিক বনায়নের মূল্যবান বৃক্ষরাজি বিলীন হচ্ছে। টিলাভূমিতে কালের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে গাছের গুড়া। ফলে বৃক্ষশুন্য হচ্ছে বনের টিলাভূমি এবং পরিবেশেরও ক্ষতি বয়ে আনছে।
সরেজমিন কামারছড়া বনবিটের সামাজিক বনায়ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার দুর্গম এলাকা হিসাবে পরিচিত কামারছড়া সামাজিক বনের টিলা। সীমান্ত ঘেষা বনের টিলার কালিছালিসহ বিশাল এলাকায় গড়ে উঠে সামাজিক বনায়ন। কামারছড়া এলাকায় প্রায় ২ ঘন্টার পথ আকাশি, বেলজিয়ামসহ বিদেশী প্রজাতি ও দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের গাছ গাছালি দিয়ে বন সৃজিত হয়। তবে বনের বড় বড় গাছগুলো প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে পাচার করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পর্যায়ক্রমে বনের এসব গাছ কেটে পাচারের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি টিলায় কালের স্বাক্ষী হিসাবে গাছের গুড়া দেখা গেছে। অব্যাহতভাবে বনের মূল্যবান গাছ কেটে ফেলায় টিলাভূমি বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়ছে। এর মাধ্যমে পরিবেশগত বিপর্যয়েরও সম্মুখীন হচ্ছে। এতে বন্যপ্রাণী ও পাখির আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে। এভাবে সামাজিক ওই বনের গাছ কেটে পাচার অব্যাহত থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই পুরো এলাকা বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়বে বলে অনেকের ধারণা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, বনবিট কর্মকর্তার জ্ঞাতসারেই দেখভালের দায়িত্বে যারা আছে তারাই এসব গাছ কেটে পাচার করছে। দুর্গম বনের টিলা থাকার সুবাধে প্রকাশ্যে দিবালোকে নির্বিঘেœ তারা গাছ কেটে পাচার করছে। কাঠ পাচারকারীরা দীর্ঘ সময় ধরে বড় বড় অধিকাংশ গাছ কেটে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। এখন ছোট গাছগুলোও কেটে নিচ্ছে। এসব বিষয়ে বন বিভাগের বিট অফিসারকে কিছু জানালেও কোন কাজ হয় না বলে তারা অভিযোগ করেন। তারা আরও বলেন, প্রভাবশালী মহলের কারনে বনের টিলা ফাঁকা হচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে রাজি নন।
তবে অভিযোগ বিষয়ে কামারছড়া বনবিট কর্মকর্তা মীর বজলুর রহমান বলেন, সামাজিক বনের গাছ কাটা হচ্ছে এমন বিষয়টি আমি জানি না। তবে দীর্ঘ সময় আগের দু’একটি গাছ কাটা থাকতে পারে। এসব বিষয়ে মামলাও রয়েছে।
কমলগঞ্জের রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, কামারছড়া সামাজিক বন এলাকায় দু’টি গ্রুপের দ্বন্ধ চলছে। তাছাড়া ইতিপূর্বে যে কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে সে বিষয়ে মামলাও করেছেন বিট কর্মকর্তা। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।