সিলেট ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২০
মিজানুর রহমান রুমান, সুনামগঞ্জঃঃ
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনসহ ২৬ জনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় নিহত যুবলীগ নেতা আব্দুল আলিম তালুকদারের মাতা গোলাপজান বিবি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ গ্রামের বড়ধই জলমহালে। নিহতের নাম আব্দুল আলিম তালুকদার। সে সদর উপজেলা যুবলীগের নেতা এবং স্থানীয় প্রতিবাদী যুবক ছিল। মামলা ও স্থানীয় সুত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের ভাড়াটিয়া লোক ফারুক মিয়া মোবাইল ফোনে নিহত আলিমকে মাছ দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় জলমহালের খলায়।
সেখানে ইজারাদার মনোয়ার হোসেন, হাজী হেলাল, মুনিমের নির্দেশে এলোপাতাড়িভাবে আলীমকে পিঠিয়ে গুরুতর জখম করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে চাইলে ইজারাদারের লোকজন তাতে বাঁধা দেয়। পরে নিহত আলিমের মাতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের কাছে আকুতি মিনতি করে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন এবং একটি সিএনজি যোগে তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে ইজারাদারদের প্রভাবে সেখানে চিকিৎসা করতে দেয়নি।
পরবর্তীতে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার আলিমের শারীরিক অবস্থা আশংখাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওসমানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে আলিম মারা যায়। শনিবার বিকালে আলিমের লাশের ময়না তদন্ত শেষে সুনামগঞ্জ সদর থানার সম্মুখে নিয়ে আসলে এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় এবং এলাকার বিক্ষুদ্ধ যুবকরা আলীম হত্যার সাথে জড়িতদের ফাঁসি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
জানা যায়, আলিমের জায়গা জোরপূর্বক ইজারাদারের লোকজন দখল করে নেয় এবং আলীমের রেকর্ডীয় ডোবা থেকে আবারও মাছ ধরতে নিষেধ করায় এ ঘটনার সৃষ্টি হয়। আলীমের ৮ মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী কোথায় যাবে? কার কাছে বিচার চাইবে? সুত্র জানায়, ইজারাদার মনোয়ার হোসেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন’র নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবের ভাগিনা। মামলা দায়েরে পুলিশ গরিমসি করে বলেও অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।
এ ঘটনায় রবিবার নিহতের মা বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৩০জনকে আসামী করে মামলা রুজু করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ৪জনকে আটক করেছে। নিহত আলীম তালুকদারের ভাবী ফুলবানু জানান, আমার দেবর আমাকে বলেছে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের অর্ডারে তাকে ধরে নিয়ে খলায় মারপিট করে। মনোয়ার সাব নিজে বুটপায়ে তার উপরে ওঠে লাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত করেন। আমার দেবরের খুনি ইজারাদার নিজেই। আমরা তার ফাঁসি চাই।
আলীম তালুকদারের খালাতো ভাই উম্মর আলী জানান, ইজারাদার মনোয়ার অর্ডার দিছইন আলীমরে মাইরা ২ কোটি টাকা খরচ করতে। তাইনের অর্ডারে বিলের লোকজন আমার ভাইরে খলায় এনে জানে মারছে। তারা মারার পর চিকিৎসা নিতেও দেয়নি। মাইরের চুটে আলীমের মুখে ও প্রশ্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমরা আলিম হত্যার ঘটনায় খুনিদের ফাঁসি চাই। বড়দই বিলের ইজারাদার মনোয়ার হোসেন জানান, আমরা চারদিন আগে বিল ফিশিং করে চলে এসেছি। এসব ঘটনায় আমরা জড়িত নই। আমরা কিছুই জানি না।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, দুইদিন আগে যুবক আলীমকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়েছিল। ভেতরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শুক্রবার রাতে আহত আলীম ওসমানী হাসপাতালে মারা যায়। ২৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | |||||
3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 |
10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 |
17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 |
24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 |