সিলেট ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
আদালত/প্রতিবেদকঃ
ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী বিধিমালার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ১২ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সেকশন অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সিলেটের সিনিয়র স্পেশাল জজ (মহানগর দায়রা জজ) আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন (স্পেশাল মামলা নং- ৫/২০২০)।
আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন, সিলেট অফিসকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সেকশন অফিসার সাইফুল ইসলামের পক্ষে বুধবার দাখিলকৃত এই মামলার গ্রহণীয়তা শুনানীতে অংশ নেন সিনিয়র এডভোকেট আব্দুল গফুর, সিলেট ল’কলেজের অধ্যক্ষ, সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ মহসীন আহমদ, মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর সিনিয়র এডভোকেট মফুর আলী, এডভোকেট মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, এডভোকেট খোরশেদ আলম ও এডভোকেট জয়ন্ত দাস।
মামলায় যাদের বিবাদী করা হয়েছে, তারা হলেন- সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কুদ্দুস (৬০), সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট একেএম গোলাম কিবরিয়া তাপাদার (৬২), সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ৯৪৬), হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিহার কান্তি রায় (৪৫), সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর কবির (৪৪), সহকারী কলেজ পরিদর্শক মোঃ আবুল কালাম (৪৩), সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ আহমদ (৪৬), উচ্চমান সহকারী মোঃ সাইফুল আলম (৪২), অফিস সহকারী মোঃ আবুল মানিক (৪০) ও অফিস সহায়ক মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৬)।
বাদী তার আরজিতে অভিযোগ করেন, বিবাদীরা সিলেট শিক্ষাবোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা একে অন্যের সহযোগীতায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ও প্রমাণ রয়েছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বোর্ডের প্রয়োজনীয় মালামাল ও সরঞ্জাম কেনার নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে অপরাপ আসামীরা বোডের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম গোলাম কিবরিয়া তাপাদারের স্বাক্ষরে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট চাকুরী প্রবিধানমালা- ২০১৩ খসড়া’ নামে একটি জাল চাকুরী বিধিমালা তৈরী করেন।
১নং আসামী বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কুদ্দুস ঐ বিধিমালা জাল জেনেও বোর্ডের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীকে বেআইনীভাবে পদোন্নতি প্রদান করেন। ফলে, ঐ বেআইনী পদোন্নতির ফলে সিলেট শিক্ষাবোর্ড ও সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্ষতিসাধিত হয়েছে।
বাদী তার আরজিতে অভিযোগ করেন, যে জাল বিধিমালায় বিবাদীরা বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন, তাতে উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা পদটি জাতীয় বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেডেও হওয়া সত্বেও বিবাদীরা এই পদটিকে ৫ম গ্রেডে রূপান্তরিত করেছে।
অনরূপভাবে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সহকারী মূল্যায়ন কর্মকর্তা, সহকারী সচিব ও সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার পদ ১১ম গ্রেডভূক্ত অর্থাৎ ২য় শ্রেণীর হওয়া সত্বেও সিলেট শিক্ষাবোর্ডে এ পদগুলোতে ৯ম গ্রেডের অর্থাৎ ১ম শ্রেণীর বেতন দেয়া হচ্ছে। স্টেনোগ্রাফার, হিসাব রক্ষক/অডিটর ইত্যাদি পদে ১২তম গ্রেডে বেতন দেয়ার কথা থাকলেও সিলেট বোর্ডে এ পদের কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন ১০ম গ্রেডে। ফলে, প্রতি মাসে সিলেট বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরষ্পর যোগসাজসে সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘণ করে বিপুল পরিমাণ সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন।