এলাকাবাসীর বাধাঁয় গৃহবধুর লাশ দাফন হয়নি বিশ্বনাথে 

প্রকাশিত: ৬:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০

এলাকাবাসীর বাধাঁয় গৃহবধুর লাশ দাফন হয়নি বিশ্বনাথে 
২০১ Views
প্রতিনিধি/বিশ্বনাথঃঃ
সিলেটের মানিকপীর টিলায় দাফন করা হলো বিশ্বনাথের গৃহবধূ ফাতেমা বেগমের (২১) লাশ। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার (০৩জুলাই) বিকেলে স্বামীর বাড়ি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁওয়ে মরদেহ নেওয়া হলেও পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি গ্রামবাসী।
ফলে ওইদিন (শুক্রবার) সন্ধ্যায় দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সযোগে ওই গৃহবধূর লাশ মানিকপীর টিলায় নিয়ে গেছেন তার স্বামী জামিল আহমদ (২৫)। ওইদিন (শুক্রবার) রাত ৮টায় সিলেটের মানিকপীর টিলায় দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানাগেছে।এর আগে বৃহস্পতিবার (০২জুলাই) দুপুরে থানা পুলিশের এসআই ওসমান আলী স্বামীর বসতঘর থেকে ওই গৃহবধূ ফাতেমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর ময়তা তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। কিন্তু ফাতেমা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে যেমন রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি এলাকায় নানা গুঞ্জন রয়েছে।
তবে, ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফাতেমার মা রঙমালা বেগম (৪৮) ও বড়ভাই রুবেল আহমদ। এমনকি হত্যার অভিযোগ এনে শুক্রবার বিকেলে বোনজামাই জামিল আহমদ (২৫), মাওই রুকেয়া বেগমকে (৪৮) অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন রুবেল।স্থানীয় ও এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার শেখেরগাঁওয়ের সাইদ আলীর ছেলে জামিল আহমদের সঙ্গে ২য় বিয়ে দেওয়া হয় একই উপজেলার আনরপুর গ্রামের হতদরিদ্র ইলিয়াছ আলীর মেয়ে ফাতেমা বেগমকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুক না দেওয়ায় প্রায়ই ফাতেমাকে নির্যাতন করা হতো। এনিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে।
এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলে সালিশকারীরা বাবার বাড়িতে ফাতেমাকে পাঠিয়ে দেন। প্রায় ৫মাস আগে ফের ফাতেমাকে তার শ্বশুর বাড়িতে নেওয়া হলে আর বাবার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেননি স্বামী ও শ্বাশুড়ি। অবশেষে যৌতুকের এক লাখ টাকা না দেওয়ায় ফাতেমাকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ি শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তার ভাই রুবেল আহমদ।সালিশ ব্যক্তিত্ব শাহ্ তোফাজ্জল হোসেন ভান্ডারী এ প্রতিবেদককে বলেন, ফাতেমার স্বামী জামিল আহমদ একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করায় মাসে একবার বাড়িতে আসেন। এই সুযোগে শ্বাশুড় সাইদ আলী পুত্রবধূ ফাতেমাকে কু-প্রস্তাব দেন। আর তাতে তাদের পরিবারে কলহের সৃস্টি হয়।
এনিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে।একাধিক সালিশ বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করেছেন গোয়াহরি গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন ও শেখেরগাঁওয়ের সালিশ ব্যক্তিত্ব মছব্বির আলী ও রাশিদ আলী। তারা সাংবাদিকদের বলেন, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাধ ও একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে।
ফাতেমার স্বামী জামিল আহমদ শ্বাশুড়ি ও সমন্ধিকের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ঘটনার আগেরদিন ঢাকা থেকে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। আবার পরক্ষণে বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, চট্রগ্রাম থেকে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। আর বাড়ি ফেরার পরদিন তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ থানার ওসি মামীম মুসা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন, তদন্তও চলছে। তবে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট ছাড়া হত্যা না আত্মহত্যা তা বলা যাচ্ছে না এমনকি মামলাও নেওয়া যাচ্ছেনা।
Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031