হলুদ রঙের সূর্যমুখী যেন প্রাকৃতিক স্বর্গ!

প্রকাশিত: ৭:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২০

হলুদ রঙের সূর্যমুখী যেন প্রাকৃতিক স্বর্গ!

প্রতিনিধি/ জৈন্তাপুরঃঃ

এ যেন এক ফুলের রাজ্য, এখানে এলে যে কারো মন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠবে। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙের সূর্যমুখী ফুল।বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে ঝর্ণা বেষ্টিত লাল শাপলা বিলের পাশেই প্রাকৃতিক স্বর্গ সৃষ্টি করে দাঁড়িয়ে আছে সূর্যমূখী ফুল বাগান।প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে ভরপুর জৈন্তাপুর উপজেলা। জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওর এখন পর্যটকদের আকর্ষনীয় একটি স্থান। লাল শাপলার পাশাপাশি সূর্যমূখীর বাগান থাকায় এখানে দর্শনার্থীদের পদচারণা বেড়েছে। মাঠে কৃষকের স্বপ্ন সূর্যমূখী ফুলে রঙিন হয়েছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমূখী চাষ করেছে স্থানীয় চাষিরা। সূর্যমুখী চাষের ফলে অনেকের আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমবারের মতো কৃষক চার টন সূর্যমূখীর বীজ উৎপাদন করতে পারবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সূর্যমূখী বিক্রি করে এবার কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে বলে আশা স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের।সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমূখী চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন কৃষি কর্মকর্তারাও। এই ফুল চাষে লাভের সম্ভাবনা বেশি বলেও জানিয়েছেন তারা। সিলেটের মাটিতে সূর্যমুখী চাষ করার লক্ষ্যে বিগত তিন বছর যাবত বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় গবেষণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনিস্টিটিউড (বারি) সিলেট শাখার গবেষকরা।উপজেলার বিভিন্ন সূর্যমুখী প্রদশর্নী জমিতে গিয়ে দেখা যায়, হলুদ ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। আশপাশের মানুষজন বিকালবেলায় স্বজনদের নিয়ে সূর্যমুখী প্রদশর্নীতে ভিড় জমাচ্ছেন।গত পৌষ মাসের প্রথম দিকে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, একটি পরিণত সূর্যমুখী ফুলের গাছ ৯০ দিন থেকে ১২০ দিনের মধ্যেই কৃষকরা বীজ ঘরে তুলতে পারবেন। যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হায় তাহলে প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ সূর্যমূখী ফুলের বীজ পাওয়া যাবে। ১মণ বীজ থেকে ১৮ কেজি তেল পাওয়া যাবে। সূর্যমূখীর তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার এবং গাছ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যায়।জৈন্তাপুর উপজেলার ঘিলাতৈল গ্রামের কৃষক সিদ্দীক আহমদ জানান, চাচাত ভাই কামরান আহমদ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দেয়া পরামর্শে প্রথমবারের মতো আমি ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে আমাকে বিনামূল্যে বীজ, সার ও নগদ টাকা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। ভাল ফলনে আমি আশাবাদী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, সূর্যমুখী ফুল থেকে পাখির খাবারের পাশাপাশি কোলেস্টেরল মুক্ত তেল উৎপাদন করে ক্ষতিকর পাম অয়েল ও সয়াবিনের স্বাস্থ্যঝুকি থেকে রক্ষা পাবে মানুষ। চলতি বছরে ১০ বিঘা জমিতে ৫ জন কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ, সার ও আন্ত-পরিচর্যার জন্য উপকরণ ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হায় তাহলে প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ সূর্যমূখী ফুলের বীজ পাওয়া যাবে। ১মণ বীজ থেকে ১৮ কেজি তেল পাওয়া যাবে। এই তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

March 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31