সিলেট ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২০
জেলা প্রতিনিধিঃঃ
করোনার ভয়াল থাবায় ভেঙে পড়েছে হবিগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগ। একদিকে জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারি করোনায় আক্রান্ত, অন্যদিকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ তিনটি হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা। সব মিলিয়ে করুণ অবস্থায় পৌঁছেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে ভুগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জে ইতোমধ্যে ৪৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ১৭ জনই স্বাস্থ্য বিভাগের। মূলত ২০ এপ্রিল লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ও একজন নার্স করোনায় আক্রান্ত হন। পরদিন ২১ এপ্রিল লাখাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরও একজন নার্স আক্রান্ত হন।
ওইদিন রাতেই লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এছাড়া চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও ব্রাদার এবং মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্রাদারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সবশেষ ২৫ এপ্রিল একদিনেই হবিগঞ্জে ২১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। যাদের মধ্যে ১১ জনই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারি। এ অবস্থায় পরদিন রাতে জেলার ৩৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার অন্যতম ভরসা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ৩ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
এতে বিপর্যয় দেখা দেয় চিকিৎসা সেবায়। জরুরী চিকিৎসা সেবায় বিত্তশালীরা প্রইভেট হাসপাতালে ঝুঁকলেও বিপাকে পড়েন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা।
এদিকে, জরুরী চিকিৎসা সেবায় ১৭ এপ্রিল চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভার্চুয়াল হাসপাতাল খোলা হলেও প্রান্তিক পর্যায়ে সেটি ভুমিকা রাখতে পারেনি। ফলে সামান্য পরিমাণ দূর্ভোগও কমেনি বলে দাবি করেন অনেকে। এছাড়া, বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল খোলা রাখার কথা রয়েছে।
তবে এখনও সেটি শতভাগ নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, হাসপাতাল খোললেও চিকিৎসক, নার্সসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারি করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধিন থাকার কারণে সেবা প্রদানে ঘটবে বড় ধরণের ব্যাঘাত।
সচেতন মহল বলছেন, এমনিতে হবিগঞ্জ জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে যতেষ্ট পরিমাণে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারি নেই। এর মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে সাধারণ রোগীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থা কতদিন থাকবে সেটিও জানেন না কেউই।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জীবাণুমুক্তকরণ ও অন্য আনুষাঙ্গিক কারণে সদর হাসপাতাল লকডাউন এবং দুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জনস্বার্থ বিবেচনায় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবায় অনেক সমস্যা হবে। কিন্তু এর বিকল্পও কিছু করার ছিল না।