সিলেট ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:০০ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০
বুলবুল আহমদ/ নবীগঞ্জঃঃ
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের ৩ সন্তানের জনক ও হাঁস খামারী নিরিহ দুলাল মিয়া (৩০) নামের ব্যক্তিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই বলে গুরুতর অভিযোগ নিহতের পরিবারের ।
এ মামলার কোন আগ্রগতি না হওয়ায় এবং আসামীরা বীরদর্পে এলাকায় চলাফেরা করায় মামলার বাদী নিহত দুলালের স্ত্রী ফাতেহা বেগম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। এমন কি অভিযোগ রয়েছে, মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে র্শীষ কয়েক রাজনৈতিক নেতা ও কতিত চেয়ারম্যান এর আতাত রয়েছে।
মামলা এজাহার ও নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২০ মার্চ বিকাল আড়াইটায় উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বকশিপুর গ্রামের আছমত মিয়ার পুত্র লালন মিয়া, দুধু মিয়া ও তার সহযোগীরা আলমপুর গ্রামে দুলাল মিয়ার হাঁস খামারে এসে তাকে হাঁসের বাচ্চা স্বল্প মূল্যে ক্রয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ দুলালকে একটি সিএনজি যোগে গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
এরপর তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিয়ে খোঁজাখুঁজি করলেও দুলালের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওইদিন দিবাগত রাত অনুমান ১০টায় দুলালের পরিবারের কাছে অজ্ঞাত একটি মোবাইল নাম্বার থেকে কল আসে দুলাল মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন।
তাৎক্ষণিক দুলালের পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন লামুয়া বাজারের নিকটে চলে যান। সেখানে গিয়ে দুলালকে না পেয়ে দুলালের বড় ভাই আলাল মিয়া ও সিতার মিয়া সহ তার আত্মীয় স্বজন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুমূর্ষ দেখতে পান।
এসময় দুলালের অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথিমধ্যেই দুলাল চলে যায় না ফেরার দেশে। পরে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার লাশ দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ফাতেহা বেগম মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। অবশেষে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নিহত দুলালের স্ত্রী একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। লালন মিয়া, দুদু মিয়া ও রিংকু দাশ সহ অজ্ঞাত ৪/৫জনের বিরোদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলাটি মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় তদন্তাধীন রয়েছে।
নিহতের মা সুন্দরী বিবি এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার আদরের ধন দুলালকে প্ররিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলো। কিন্তু আজ ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করেনি! আমি মরার আগে কি আমারে ছেলে হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারবো?
মামলার বাদী নিহত দুলালের স্ত্রী ফাতেহা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে যে বা যাহারা হত্যা করলো তারা বীরদর্পে চলাফেরা করছে। কিন্তু পুলিশ আমার স্বামী হত্যার আসামীদের ধরছেনা। আমি এর সুষ্ট বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ঐ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়াউল হক এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আদালতের আদেশ মোতাবেক ময়না তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, এখনও ময়না তদন্তের রিপোর্ট আমাদের হাতে আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কোন তদবির অথবা কোন প্রভাব এই মামলাতে নেই।