যতো কুকীর্তি আরডিসি নাজিমউদ্দীনের

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২০

যতো কুকীর্তি আরডিসি নাজিমউদ্দীনের
১০৩ Views

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

 

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে নির্যাতনকারী আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব) নাজিমউদ্দীন কক্সবাজার ও মাগুরার মহম্মদপুর থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। নাজিম উদ্দীনের হাতে বিভিন্নভাবে নির্যাতিতরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কক্সবাজার ও মাগুরার মহম্মদপুরে খোঁজ নিলে ভুক্তভোগীরা ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে কথা বলেন।কক্সবাজারে ‘স্যার’ বলে না ডাকায় রোজাদার বৃদ্ধকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারপিট, কিল-ঘুষি মেরে আলোচনায় আসেন এসিল্যান্ড নাজিমউদ্দীন। সেখানে থাকাকালীন ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করতেন না তিনি। বহুজনের কাছ থেকে নামজারিসহ জমি সংশ্লিষ্ট কাজের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। এরপর তাকে বদলি করা হয় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা ভূমি অফিসে। মহম্মদপুরে যোগদান করেই ব্যক্তি মালিকানা জমি খাস করে সরকারি হিসেবে বরাদ্দ বাণিজ্য শুরু করেন। কোটি কোটি টাকা উৎকোচ আদায় করেন বিভিন্নজনের কাছ থেকে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ধরে এনে পিটিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করতেন। জমি নিয়ে বিরোধে ওষুধ ব্যবসায়ী সদরের বাদশা ফকিরকে এক বছরের জেল দেন। ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে বড় উৎকোচ দাবি করেন।

মহম্মদপুরের কয়েকজন বলেছেন, নিজাম উদ্দীন ভূমি অফিসের কয়েকজনের সহায়তায় রীতিমতো মাস্তানি করতেন। মহম্মপুরের ভুক্তভোগীদের বাদশা ফকির বলেন, ‘আমার পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে সরকারের সাথে মামলা বিচারাধীন। এবং আদালতের রায় অনুযায়ী কোনো পক্ষই এই জমিতে যেতে পারবে না বা কোনো স্থাপনা তৈরি করতে পারবে না। কিন্তু এসিল্যান্ড নাজিমউদ্দীন আমাকে না জানিয়ে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে মার্কেটের দোকানঘর বরাদ্দ দেন ওই জমিতে। পরে পিয়ন দিয়ে আমাকে তার অফিসে ডেকে নেন। অফিসের দরজা বন্ধ করে এই ব্যাপারে আপসের কথা বলে হুমকি দেন। এতে রাজি না হয়ে আমি বাড়ি চলে যাই। এ ঘটনার কয়েকদিন পর তিনি আমার বাড়িতে গিয়ে ভূমি অফিসের লোক নিয়ে অভিযান চালান। এ সময় অন্যায়ভাবে তিনি আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে আমাকে ভূমি অফিসে নিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেন ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। আমি নাকি অবৈধ গর্ভপাত ঘটাই। এই মিথ্যা অভিযোগে আমাকে সাজা দেন তিনি। মূলত তার কথা না শোনায়, তিনি আমাকে সাজা দিয়েছিলেন।এদিকে, কক্সবাজার সদরের এসিল্যান্ড থাকাকালীন ২০১৮ সালের মে মাসে রোজাদার এক বৃদ্ধকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। মাটিতে পড়ে থাকা বৃদ্ধের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বসে কিল ঘুষি মারেন। এক পর্যায়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে করতে কান ধরে টেনে-হিঁছড়ে তুলে কক্সবাজার সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হলে নাজিম উদ্দীনকে কক্সবাজার থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। নির্যাতনের শিকার ওই বৃদ্ধের নাম মোহাম্মদ আলী ওরফে নফু মাঝি।

তিনি কক্সবাজার শহরের কলাতলীর মৃত কবির আহমদের ছেলে।সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঘটনার সময়টি পবিত্র রমজান মাস ছিল। আমি রোজা রেখেছিলাম। ওইদিন হঠাৎ করেই আমার ভিটেতে কয়েকজন লোক গিয়ে জমি পরিমাপ করা শুরু করেন। এ সময় আমি তাদের-‘আপনারা কারা’ জিজ্ঞেস করতেই এসিল্যান্ড নাজিম আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে লাথি মারেন। আমি মাটিতে শুয়ে থাকলে এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমাকে স্যার ডাকলি না কেন?’ এসময় তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমি মাটিতে শোয়া অবস্থায় আমার বুকের ওপর বসে মারধর করতে থাকেন। আমাকে আমার বাড়ি থেকে তুলে কান ও শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে গাড়িতে তুলে এসিল্যান্ড সদরের অফিসে নিয়ে যায়।কক্সবাজারের স্থানীয়রা বলছে, এই নাজিম উদ্দীন দুই বছর আগে কক্সবাজার সদরের এসিল্যান্ড ছিলেন। দায়িত্বকালে বহু বিতর্ক জন্ম দেন। তাকে ‘স্যার’ না ডাকায় এক সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করেছিলেন।নাজিম উদ্দীনের গ্রামের বাড়ি যশোরের মণিরামপুরে। ৩৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন তিনি।এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীনের মোবাইল ফোনে বার বার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

December 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031