সিলেট ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৪
প্রতিনিধি/ছাতকঃঃ
এক স্কুল শিক্ষকের আকস্মিক বদলীর খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের আর্তনাদে বিদ্যালয় এলাকায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। ক্রন্দরত শিক্ষার্থীরা বলছে স্যার চলে গেলে এ বিদ্যালয়ে তারা আর আসবে না।
এসময় একই সুরে বিক্ষোব্ধ অভিভাবকরাও বলছেন অন্যায়ভাবে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পংকজ দত্তকে বদলী করা হলে তাদের সন্তানদের আর এ বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না। এতে যদি তাদের সন্তানদের শিক্ষার আলো এখানেই নিবে যায় তাতেও তারা সিদ্ধান্ত বদলাবেন না।
এ হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ছাতকের ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের শ্যামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কোন কারন ছাড়াই এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পংকজ দত্তকে আকস্মিক বদলীর বিরুদ্ধে এবং বহাল রাখার দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ছাতক সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক ও শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন জানাবেন।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শ্যামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৫ সালে। ২০১৫ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে পংকজ দত্ত এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের কাব শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের জন্য ২০১৮ ও ২০২২ সালে জেলার শ্রেষ্ট কাব শিক্ষক এবং ২০২৩ সালে জেলার শ্রেষ্ট সহকারী শিক্ষকের গৌরব বয়ে আনেন তিনি। ২০২৩ সালে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব ভার গ্রহন করে। টানা ৯ বছর শিক্ষকের দায়িত্ব পালন কালে বিদ্যালয়কে একটি আদর্শ বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। সরকারী উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা নিয়ে এ বিদ্যালয়কে সাজিয়েছেন শিক্ষার অনুকুল পরিবেশে।
এ সুবাদে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর ভালোবাসা কুড়িয়ে একজন আদর্শ মানবিক শিক্ষকের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি। একজন প্রবাসীর সহায়তায় ১২টি ল্যাপটপ দিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব। ৩ জুলাই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে পরিদর্শন বুকে শ্যামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়লয়কে অন্যান্য বিদ্যালয় অনুসরণ ও অনুকরণ করার কথা লিখেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না। সম্প্রতি এক বদলীর আদেশে বিনা মেখে ব্রজ্রপাত ঘটেছে শ্যামনগর সরকারী প্রাথীমক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের মাঝে। ১১ আগষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহনলাল স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিদ্যালয়ে প্রভাব বিস্তার এবং গোপনীতা নষ্টের অভিযোগ এনে তাকে অন্যত্র বদলীর আদেশ দেন। একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারী কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আফিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(ঘ) উপবিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং একই বিধিমারার ৪(৩)(ঘ) উপবিধি অনযায়ী কেনে তাকে চাকুরী থেকে অপসারন করা হবে না তা বা বিধি মোতাবেক অন্যকোন শাস্তি দেয়া হবে না তা অভিযোগ প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্ত অভিযোগটি এ শিক্ষকের হাতে পৌছতে নির্ধারিত ১০ কার্যদিবস অতিবিাহিত হয়ে গেছে বলে পংকজ দত্ত জানিয়েছেন।
তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে কে বা কারা কখন অভিযোগ দিয়েছে এবং এ অভিযোগের কখন কে তদন্ত করেছে বলে তিনি জানেন না। এদিকে শিক্ষক পংকজ দত্তের বদলীর খবরে ফুসে উঠেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসী।