সুনামগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৩৪টি বালুভর্তি বাল্কহেডসহ ড্রেজার মেশিন জব্দ

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪

সুনামগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৩৪টি বালুভর্তি বাল্কহেডসহ ড্রেজার মেশিন জব্দ

সুনামগঞ্জ(দোয়ারাবাজার)প্রতিনিধিঃঃ

সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে অবাধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। বিজিবি, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গত দুইদিন ব্যাপী ডলুরা ও বিশ্বম্ভরপুর সীমান্ত পর্যন্ত ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বালুভর্তি ১১৮ টি বাল্কহেড ও বেশ কিছু ড্রেজার মেশিন আটক করা হয়।

 

এদিকে,সদর থানার এসআই ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরো ১৭টি বালুভর্তি নৌকা আটক করা হয়েছে।

 

জানা যায়, গত বেশ কিছুদিন যাবৎ ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে চলছিলো বালু লুটের মহোৎসব। পুলিশের জনবল কম থাকা সেই সাথে অনেকবার বালু লুটেরাদের হামলার শিকার হওয়ায় কিছুতেই থামানো যাচ্ছিলো না বালু খেকোদের তান্ডব। অবাধে বালু লুটের কারনে  সরকার হারাচ্ছিলো মোটা অংকের রাজস্ব। অপরদিকে হুমকির মুখে ছিলো পরিবেশ। এই অবস্থায় বালু খেকোদের আগ্রাসন বন্ধে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে অবৈধভাবে বালু লুঠ ঠেকাতে যৌথবাহিনীর এই অভিযানকে সাধুবাধ জানিয়েছেন সচেতন মহল। তাদের মতে পুলিশের একার পক্ষে বালু খেকোদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো সম্ভব নয়। গত বেশ কিছুদিন আগেও পুলিশ সুপারের নির্দেশে এসআই ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে বালু লুঠ ঠেকাতে অভিযান চালায় পুলিশ। পরবর্তীতে বালুখেকোরা প্রতি নৌকায় ১০-১৫ জন করে লোক ভাড়া করে নিয়ে আসে এবং পুলিশ অভিযান চালাতে গিয়ে তাদের হাতে হামলার শিকার হয়। এসব সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে রামদা, লোহার রড়, ইট-পাটকেলসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র থাকা, এদিকে পুলিশের জনবল কম থাকায় তাদের সাথে মোকাবেলা করতে গিয়ে অনেকবার আহত হয়েছেন পুলিশের বেশ কিছু সদস্য। তাই ধোপাজান চলতি নদীতে পুলিশ, বিজিবি, নৌ-পুলিশসহ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যৌথ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে বালু খেকোদের আগ্রাসন বন্ধ করা সম্ভব বলে ধারনা সচেতন মহলের মানুষসহ স্থানীয়দের।  তাদের এই যৌথ অভিযানকে স্বাগত জানান সচেতন মহলের মানুষ।

 

সদর উপজেলার ইব্রাহিম পুর গ্রামের আব্দুল আলী জানান, ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে বেশ কিছুদিন ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো একটি বালুখেকো চক্র। সদর থানার এসআই ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে পুলিশ বালু লুঠেরাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে তাদের ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন কিছু পুলিশ সদস্য। জনবল কম থাকায় পুলিশের একার পক্ষে ওই বালু সিন্ডিকেট চক্রকে আটকানো সম্ভব ছিলো না। যৌথবাহিনীর অভিযানের পর এখন বালুলুঠ বন্ধ রয়েছে। তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকলে আমরা আশাবাদী আগামীতে আর বালু লুটের ঘটনা ঘটাতে কেউ সাহস পাবে না।

 

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩৪টি বালুভর্তি ও কিছু সখ্যক খালি নৌকাসহ বেশ কিছু পরিবেশ বিনষ্টকারী ড্রেজার মেশিন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক জানান, সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে পুলিশ, নৌ-পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ডলুরা ও বিশ্বম্ভরপুর সীমান্ত পর্যন্ত  ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বালুভর্তি বাল্কহেড ও বেশকিছু ড্রেজার মেশিন আটক করা হয়েছে।  এ

 

ছাড়াও সদর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে আরো ১৭টি বালু ভর্তি নৌকা আটক করা হয়েছে। এগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

 

তিনি আরো জানান, জনবল কম থাকায় ওই এলাকা পুলিশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। বালু সিন্ডিকেটের লোকেরা অনেক সময় পুলিশের উপর হামলা চালায়। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Spread the love

আর্কাইভ

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031