সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২০
আবুল ফয়েজ খান কামালঃঃ
বিএনপির শক্তিমান নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও তার গুম হওয়ার রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে বাসায় ফেরার পথে বনানীর আমতলী গলির মুখ থেকে ফিল্মি স্টাইলে ইলিয়াস আলী কে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার সাথে থাকা গাড়ি চালক আনসারকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার প্রাইভেট কারটি রাস্তায় পড়ে থাকার সংবাদে পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা তার খুজ করতে থাকেন।
শুরুতে পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করেছিলো গ্রেফতারের উদ্দেশ্যেই হয়তো থাকে তুলে নেওয়া হয়েছে। সারা রাতেই ইলিয়াস আলীর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় সকাল থেকেই সারা দেশের রাজপথে নেমে আসে দলীয় নেতাকর্মীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী থানায় দায়ের করা হয় জিডি। লাগাতার হরতাল সহ রাজপথের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশ।
ইলিয়াস আলীর নিজ উপজেলা বিশ্বনাথে আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের উপর গুলি চালালে ৩ জন নিহত এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে তার স্ত্রী তা্হসিনা রুশদির লুনা তার ৩ ছেলে -মেয়ে সহ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। তারা ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে তিনি মানবিক কারনে বিষয়টি দেখবেন বলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী, সন্তান ও ভাইকে আশ্বস্ত করেন। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে এসময় হাইকোর্টে একটি রীট করে তার পরিবার।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকেই তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুমের সাথে জড়িত বলে দাবি করা হয়। বিএনপির এই শক্তিমান নেতা ইলিয়াস আলী গুমের ঘটনায় দেশে-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হলে শুরুর দিকে গুম রহস্য উদঘাটনে কিছুটা তোড়জোড় থাকলে আস্তে আস্তে তা ঝিমিয়ে পড়ে। প্রতি বছর এই তারিখে ঢাকা ও সিলেটে ব্যাপকভাবে কর্মসুচি পালন করে বিএনপি ও এর অংগ সংগঠন ও ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ। এছাড়া প্রতি মাসের ১৭ তারিখ ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া ও বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করা হতো।গুমের তারিখে এবার মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে কোনো কর্মসুচি হাতে নেওয়া হয়নি।
ইলিয়াস আলী গুমের পর থেকেই ছেলের চিন্তায় কাঁদতে কাঁদতে এখন অনেকটা মুমূর্ষু হয়ে পড়েছেন তার মা সু্র্যবান বিবি। ইলিয়াস আলী গুমের পর স্বামী ও সন্তানের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহসিনা রুশদীর লুনা। দেশে বিদেশে দীর্ঘ চিকিৎসায় সুস্থ হলেও এখনো চিকিৎসকের পরামর্শেই চলতে হচ্ছে থাকে। ইলিয়াস আলী গুমের ৮ বছর আজ। কিন্তু তার গুম রহস্য আজও রয়ে গেলো অজানা। তার পরিবার, স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা
এখনো তার ফেরার অপেক্ষায় আছে, তাদের বিশ্বাস ইলিয়াস আলী একদিন ফিরে আসবেন। দীর্ঘ ৮ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় অনেকের মনেই এখন একটাই প্রশ্ন বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী কি আদৌও ফিরবেন, নাকি ফিরবেন না? তার গুম রহস্য আদৌও কি উদঘাটন হবে, নাকি অজানাই রয়ে যাবে বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর গুম রহস্য?