দোয়ারাবাজারে সালিশ বিচারের নামে জনসমাগম, ধর্ষনের অভিযোগে বিয়ের দাবিতে কিশোরীর অনশন

প্রকাশিত: ৭:০৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২০

দোয়ারাবাজারে সালিশ বিচারের নামে জনসমাগম, ধর্ষনের অভিযোগে বিয়ের দাবিতে কিশোরীর অনশন

দোয়ারাবাজার/প্রতিনিধিঃঃ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ধর্ষনের অভিযোগে ছেলের বাড়িতে কিশোরীর অনশনের ঘটনায় সালিশীর নামে গ্রাম্য মাতব্বররা তুলকালাম কান্ড ঘটিয়েছেন। বুধবার সকালে অভিযুক্ত ছেলের বাড়িতে সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটিয়ে সালিশ বিচারের আয়োজন করা হয়। প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপি সালিশে এই বিষয়ে কোনো সুরাহা দিতে পারেননি গ্রাম্য মাতব্বরা। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের জুমগাঁও (ইসলামপুর) গ্রামের প্রাবাসী আবদুল মান্নানের পুত্র আবু তালেব (১৮) সম্প্রতি একই গ্রামের বারো বছরের এক কিশোরীকে তার বসত ঘরের বাথরুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা গ্রামবাসীর নিকট সাক্ষী দিতে চাইলে ছেলের পক্ষের লোকেরা ওই দিন সন্ধ্যায় মারধর করতে উদ্যত হয় এবং সাক্ষী না দিতে তাকে হমকি প্রদান করার অভিযোগ ওঠে।

পরে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে মঙ্গলবার বিকালে কিশোরী ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এ ঘটনায় বুধবার সকালে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তি করে দেয়ার লক্ষ্যে সালিশে বসেন গ্রাম্য মাতব্বররা। ওই দিন সকালে বিচার সালিশের নামে শত শত লোক জড়ো হলে উপেক্ষিত হয় স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা।

গোপন সূত্র জানিয়েছে, মেয়ে ও ছেলের বয়স কম হওয়ায় অতি গোপনে মাতব্বরদের যোগসাজসে অতিগোপনে বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম, সাবেক ইউপি সদস্য হাছিব উদ্দিন,নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া,গ্রাম্য মাতব্বর আলা উদ্দিন,মসুর আলী,আব্দুল হাই,মাওলানা শহিদুল্ল্যাহ,হাসন আলী,আজির মিয়া,নুরুল হক,জহিরুল ইসলাম জুলহাস প্রমুখ। স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, মেয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ছেলের বাড়িতে আশ্রয় নিলে এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ছেলের পক্ষ মেয়েকে মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি আরও জটিল হয়। আমরা সালিশ বিচারের মাধ্যমে সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমাধানের জন্য বসলে গ্রামের লোকজন এমনিতেই জড়ো হয়ে যায়।

বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান জসিম মাস্টার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে মেয়ের অভিভাবক কে ডেকে এনে বাল্য বিয়ের কোনো প্রস্তুতি যাতে না নেয়া হয় এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছি। তবে আজকে সালিশ বিচারের নামে জনসমাগমের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, সালিশ বিচারের নামে এত লোক সমাগম হওয়ার উচিত নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখবো।

Spread the love

আর্কাইভ

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031