তাহিরপুরে বাবা ও মাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে মেয়ে ও নাতিরা

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২০

তাহিরপুরে বাবা ও মাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে মেয়ে ও নাতিরা
জেলা প্রতিনিধিঃঃ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় মা দিবসের রাত বৃদ্ধ বাবা ও মাকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে মেয়ে ও নাতিরা। শেষ সম্বল বসত ভিটা বিক্রি করে নিজের সমস্ত পুঁজির টাকা নিজের মেয়ের হাতে দিয়েও রক্ষা পেলেন না বৃদ্ধ আব্দুল আহাদ (৮৫) ও তার স্ত্রী দিলবাহার (৭৫)। আহত পিতা মাতা বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন।
রবিবার রাত ৮টায় ঘটনাটি ঘটেছে তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের লোহাচুড়া শান্তিপুর গ্রামে। বালিজুড়ি ইউনিয়নের লোহাচুড়া শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দার  জানান,বৃদ্ধ আব্দুল আহাদের দুই ছেলে তাদের রেখে অন্যত্র কাজ করে জীবন যাপন করায় লোহাচুড়া গ্রামের ৩শতক জায়গার উপর বসবাস করে আসছিলেন। যাদুকাটা নদীতে বালিপাথরের নৌকায় লোড আনলোডের কাজ করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়েই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সংসার চলছিল কোন রখমে। এ অবস্থায় বৃদ্ধের ৩শতক বাড়ি ভূমির উপর নজর পড়ে মেয়ে শফিকুন নাহার বেগমের।
দুই বছর পূর্বে শফিকুন নাহার বেগম তার পিতা আব্দুল আহাদকে নানাভাবে ফুসলিয়ে পিতার বসতবাড়ির ৩শতক ভূমি বিক্রি করে ৭০হাজার টাকা সহ পিতামাতাকে মেয়ে শফিকুন নাহার তার স্বামীর বাড়িতে আজীবণ লালন পালনের শর্তে নিয়ে আসে।
সম্প্রতি বৃদ্ধ আব্দুল আহাদ কোন রুজি রোজগার করতে না পারায় প্রায়ই মেয়ে শফিকুন নাহার তাদের সাথে ঝগড়া শুরু করে।
এরই ধারাবাহিক গত(১০,০৫,২০২০)রবিবার রাত ৮টায় মেয়ে শফিকুন নাহার বেগম ও তার মেয়ে ছেলে মাকছুরা, মুছাব্বির মিলে অমানবিক ভাবে তার পিতা মাতাকে মারধর করে বসত ঘর থেকে বের করে দেয়। এমনকি তার বসতঘর ভাঙচুর করে বিছানাপত্রও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘরের বাহিরে ফেলে রাখে।
আহত বৃদ্ধ আব্দুল আহাদ (৮৫) ও তার স্ত্রী দিলবাহার (৭৫) বলেন,নিজ পুলাপাইনের হাতে মাইর খাইয়্যা হাসপাতালে আইমু জীবনেও ভাবছিনা। আমি অখন ভিটেমাটি ছাড়া খাওয়ারও কোন যোগাড় নাই। বাকী জীবনটুকু বাঁচতে তিনি সরকারের সহায়তা চান।
এ বিষয়ে বৃদ্ধ আব্দুল আহাদের মেয়ে লোহাচুড়া শান্তিপুর গ্রামের শফিকুন নাহার বেগম বলেন, ‘আমরা দুই বোনে ঝগড়াঝাটি করলে আমার মা বাবা আমার ছোট বোনের পক্ষে থাকে। মা বাবাকে মারধর আমি করিনি তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা করেছে।
বালিজুড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. একরামুল হক বলেন,বৃদ্ধ পিতার সম্পত্তি বিক্রি করিয়ে টাকা সহ মেয়ে শফিকুন নাহার বেগম তার মা বাবাকে আজীবন লালন পালনের জন্য তার বাড়িতে এনেছিলেন। রবিবার রাতে শফিকুন নাহার ও তার ছেলেমেয়েরা যেভাবে বুড়াবুড়িকে মারধর করেছে সেটা বলার ভাষা আমার নেই।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডাঃ ইকবাল হোসেন বলেন, রবিবার রাতে লোহাচুরা শান্তিপুর গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল আহাদ ও তার স্ত্রী গুলবাহারকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদেরকে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা ও ঔষধপত্র দেয়া হচ্ছে।
Spread the love