সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
নতুন অর্থবছরের বাজেটে সড়ক যোগাযোগ খাতে সরকারের প্রথম লক্ষ্য ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ। বহুল প্রতীক্ষিত এই সড়কটি সার্ভিস লাইনসহ চারলেনে উন্নীত করা ছাড়াও সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কার্যক্রম শুরুর প্রস্তাব হবে। এছাড়াও ঢাকা-সিলেট প্রকল্পে হবে চার হাজার ৩৫৮ মিটার দীর্ঘ চারটি ফ্লাইওভার। এর মধ্যে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে ভৈরবে বাকি তিনটিই হবে সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও দয়ামির বাজার এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন।
সিলেট-ঢাকা মহসড়কের জনবহুল বাজার হচ্ছে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও দয়ামীর। সিলেট-ঢাকা চারলেন প্রকল্প সরকার হাতে নেয়ার পর আতংকিত হয়ে পড়েন এসব বাজারের ব্যবসায়ীরা। কারণ চারলেন প্রকপ্ল করতে হলে এসব বাজারে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলতে হবে।
আর তাতে কয়েক শত কোটি টাকার সম্পদ হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতেন বিভিন্ন মানুষ। তাই সড়ক দূর্ঘটনা রোধে এবং মানুষকে যাতে ক্ষতিগ্রস্থ হতে না হয় সেজন্য চারলেন প্রকল্প গ্রহনের শুরু থেকেই সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ওসমানীনগর উপজেলার জনবহুল তিন বাজারে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি জানান। আর এই দাবির প্রেক্ষিতে চারলেন প্রকল্পে ফ্লাইওভার করা সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়।
এই ফ্লাইওভার নির্মিত হলে যানজট সমস্যার সমাধান হবে, সড়ক দূর্ঘটনা কমে আসবে এবং দোকান ভাঙ্গার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকা-চট্রগাম মহাসড়কে চারলেন করে বিভিন্ন এলাকায় যানজট থাকায় পুরোপুরি সুফল পাওয়া যায়নি। তাই সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের জনবহুল গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও দয়ামীর বাজারে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে চারলেনের সুফল পাবেন মানুষ। স্বপ্ন পূরণ হবে সিলেটবাসীর।
এদিকে, অর্থায়ন জটিলতায় দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। অবশেষে এডিবি এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়। এ বছরের শেষ দিকে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
সওজ জানায়, ২০১৭ সালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প আকার পায়। মাঝখানে এটি থেমে গিয়েছিল। তবে ভূমি অধিগ্রহণের প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয়ে আছে। ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৪ হাজার কোটি টাকা।
চারলেনের পাশাপাশি পাশে ধীর গতির যানবাহন চলাচলের জন্য দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনের আকার হবে সড়কটির। সওজ জানায়, ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২২০ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন থেকে চারলেনে উন্নীত করা হবে এ প্রকল্পে। এই চারলেনের দুইপাশে আলাদা সার্ভিস লেন থাকবে। যেখানে ‘স্লোমুভিং’ যানবাহন চলাচল করবে।
২২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সোয়া চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৭০টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এছাড়া নরসিংদী, ভৈরব, ওলিপুর, লস্করপুর ও সিলেটে নির্মাণ করা হবে রেল ওভারপাস।
নতুন পরিকল্পনায় চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ, তিনটি ট্রাক স্ট্যান্ড এবং দু’টি রেস্ট হাউজ থাকবে সড়টিতে। সিলেট চা উৎপাদনে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। বর্তমানে এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। সিলেটে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ও সার কারখানা। সিলেটের পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রচুর তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে।