বিশেষ প্রতিনিধিঃঃ
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গঠিত ঐ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ২৪ সদস্যের কমিটির ৫ জনই বিএনপি-জামায়াত পরিবারের এবং ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী। নতুন কমিটির ৭ জন সদস্যের লিখিত অভিযোগে এমনটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের তৃণমূলের ত্যাগি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা সমালোচনা।
গত ৮ জুন নবগঠিত ঐ কমিটির অনুমোদন দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও জুনেদ আহমদ। এদিকে বিএনপি-জামায়াত পরিবারের ও ছাত্রদলের পদবীধারীদের নিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করায় নতুন কমিটির ৭ নেতা শনিবার দুপুরে বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এর অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নতুন কমিটির সহ-সভাপতি কাওছার আহমদ ও ওমর শরীফ, যুগ্ম সম্পাদক জুবায়ের আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরান হোসেন, প্রচার সম্পাদক কাওছার আহমদ, উপ-প্রচার সম্পাদক কামরুল ইসলাম, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আলী শিপলু স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুন উপজেলা ছাত্রলীগ ১ বছর মেয়াদী দক্ষিণভাগ উত্তর (কাঠালতলী) ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ২৪ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দিয়ে তা প্রকাশ করে। এ কমিটির দপ্তর সম্পাদক পদপ্রাপ্ত জাকির হোসেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের বর্তমান সমাজসেবা সম্পাদক ও এর আগে কাঠালতলী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। সহ-সভাপতি ইউসূফ রুম্মানের বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য।
সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক রিপনের বাবা ইউপির ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি। যুগ্ম সম্পাদক রাহিম আহমদ রাহি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী। তাহার চাচা নাজিম উদ্দিন ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও আরেক চাচা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। সহ-সভাপতি মুরাদ আহমদের ভাই ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। তার দুই দাদা রাজাকার ছিলেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারী ৭ ছাত্রলীগ নেতা বলেন, দলের দুর্দিনে এদের আমরা ছাত্রলীগ করতে দেখিনি। ঐ কমিটির অনেকের পরিবার আওয়ামী লীগের নাম শুনতে পারেন না। তারা বিভিন্নজনের হাত ধরে ছাত্রলীগে প্রবেশ করেছেন। অনেকের পরিবারের লোকজন মিছিল দিয়ে জাতির পিতা, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের নেতা শাহাব উদ্দিনের ছবি সম্বলিত পোস্টারে ছিড়েছিলেন। এরা সুযোগ পেলে আবার চলে যাবে। ছাত্রদলনেতা ও শিবির সমর্থকদের ঐ কমিটিতে আনায় আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি।
আমরা বিশ্বাস করি নেতৃবৃন্দ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ছাত্রলীগের ঐ কমিটি থেকে বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের সমর্থিতদের বাদ দিয়ে কলঙ্কমুক্ত করবেন। বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত ৩ জুন উপজেলা শাখার আওতাধীন ৮নং দক্ষিণভাগ (উত্তর) ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করা হয়।
আগ্রহী প্রার্থীরা উপজেলা ছাত্রলীগের কাছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রসহ জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন। জীবন বৃত্তান্তের আলোকে ৮ জুন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কমিটির বেশ কয়েকজন লিখিতভাবেও জানিয়েছেন। সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।