সিলেট ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২০
এফ জুম্মান/অন্তরা চক্রবর্তী:
সিলেটের ওসমানীনগর থানার ওসি কর্তৃক উপজেলা আওয়ামী লীগ-যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের রশি দিয়ে বেঁধে থানায় নিয়ে আসার হুমকী প্রদানের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে দলীয় নেতা-কর্মীসহ উপজেলার সচেতণ মহল। তারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ওসি রাশেদ মোবারককে প্রত্যাহার ও তার শাস্তির দাবী জানিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।
ওসমানীনগর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিলদার আলী নিজের ফেসবুক হ্যাণ্ডেলে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, ‘ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউ,পি আওয়ামীলীগের সভাপতি শহীদ পরিবারের সদস্য জনাব দবির মিয়া এবং ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল ভাইকে দড়ি দিয়ে বেধে টেনে নিয়ে যাবো ওসি সাহেবের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ছাত্রলীগ নেতা রাসেল আহমেদ লিখেছেন, ‘ওসি সাহেবের এই কথাটা আমাদের জন্যে অনেক লজ্জাজনক, ওসমানীনগর থানার ওসি সাহেবের দড়ি এত লম্বা না’কি। উমরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা দবির মিয়া সাহেব, ও উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল আহমদকে হুমকি দেয়া, আর দড়ি দিয়ে বেধে আনা এটা শুধু তাদেরকে বলেন নাই। এই কথা ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে বলেছেন, এই কথা আমাদের সবার কলিজায় আঘাত করেছে।’
হাফিজুর চৌধুরী লিটু লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা –আপনার জন্য যারা রাত-দিন পরিশ্রম করে আপনার সংগঠন সুসংগঠিত করতে জীবনের মায়ার ছেড়ে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে প্রশাসনের এমন আচরণ সত্যি দুঃখজনক। ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউ,পি আওয়ামীলীগের সভাপতি শহীদ পরিবারের সদস্য জনাব দবির মিয়া এবং ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল কে দড়ি দিয়ে বেধে টেনে নিয়ে যাবো ওসি সাহেবের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মনজু আহমেদ আলী লিখেছেন, ‘কি করে একজন ওসি’র এত সাহস হয় আওয়ামীলীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ’র সাথে কারাপ আচরণ করতে…? ওসি’র এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷’ওসমানীনগর উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি মুহিবুর রহমান মিটুন লিখেছেন, ‘ওসমানীনগর থানার ওসি এর এই বক্তব্যের এবং সাধারন জনগনের সাথে সব সময় খারাপ আচরনের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।দ্রুত উনাকে চাকুরী থেকে অপসারনের দাবী জানাচ্ছি।’এদিকে ওসির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে ওসিকে বয়কটের সামাজিক কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু। তিনি বলেন, ‘ওসি রাশেদ মোবারক থানায় যোগদানের পর থেকেই বিচারপ্রার্থী লোকজনসহ সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করছেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্ধতন কর্তৃপক্ষে সাথে আলোচনা করেছি।’
এ প্রসঙ্গে ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদাল মিয়া বলেন, ‘কোন কারণ ছাড়াই উমরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দবির মিয়া, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল আহমদসহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হুমকী দেওয়া হয়েছে। যা অনাকাংখিত ও বর্জনীয়। আমি এ ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি।’ এদিকে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ওসি কর্তৃক হুমকী প্রদানের ঘটনায় শনিবার দুপুরে ভূক্তভোগীরাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ওসমানীনগর) সাথে দেখা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন জানিয়ে তাদের আশ্বস্থ করেন।
প্রসঙ্গত, উপজেলার উমরপুর ইউপি আ.লীগের সভাপতি শহিদ পরিবারের সন্তান দবির মিয়া, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল আহমদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেরাগ আলী এবং উমরপুর ইউনিয়নের সালিশি ব্যক্তিত্ব সাবেক ইউপি সদস্য তখলিছ আলীকে রশি দিয়ে বেঁধে থানায় নিয়ে আসার হুশিয়ারী দেন ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ মোবারক। গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) বিকেলে থানার অফিসিয়াল মুঠোফোন থেকে উল্লেখিত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে এমন হুমকি প্রদান করেন তিনি।