প্রতিনিধি/বিশ্বনাথঃঃ
সিলেটের বিশ্বনাথ থানার অলংকারী ইউনিয়নের মনোকোপা গ্রামের চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় থানায় পৃথক দুইটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ফজলু মিয়ার ভাই মনোকোপা জামে মসজিদের মোতায়াল্লী নিহত মখলিছুর রহমানের পুত্র আকরাম হোসেন বাদী হয়ে অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলকে খুনের হুকুমদাতা হিসাবে আসামী করে ৩১ জনের বিরোদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ১৬)।
অপর দিকে, একই ধারায় প্রতিপক্ষের নিহত ওয়ারিছ আলীর স্ত্রী নুরুননেছা ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামী করে থানায় অপর মামলাটি দায়ের করেন, (মামলা নং-১৫)।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ থানার (তদন্ত) ওসি রমা প্রশাদ। জোড়া খুনের ঘটনায় যেমন এলাকায় আতঙ্কের সৃস্টি হয়েছে, তেমনি গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ মহিলারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন বলে স্থানীয় বাসিন্ধারা জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ৫জনকে গ্রেফতার করেছে। আটককৃতরা হলেন, নিহত মখলিছ মিয়ার ছোটভাই ইউপি সদস্য ফজলু মিয়া (৫০) ও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনকে (২৫) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপর পক্ষ নিহত ওয়ারিশ আলীর ছেলে রুয়েল আহমদ (২৫), সুহেল আহমদ (১৮) ও পার্শ্ববর্তী বড়তলার মানিক মিয়াকে (৩৮)কে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু দিন ধরে জমি-জমা নিয়ে মনোকুপা গ্রামের সমছু মিয়া গং ও নুর ইসলাম গংদের মধ্যে বিরুধ চলে আসছিল। এ ব্যাপারে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু বিরুধটি কোন ভাবেই নিস্পত্তি হয়নি।
এক পর্যায়ে অলংকারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলের কাছে দুপক্ষের ৫লাখ ৫লাখ করে টাকা জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২ পক্ষ ১লাখ ১লাখ করে চেয়ারম্যানের নিকট জমা দেন।
২লাখ টাকা জামানত রাখা হয়েছিল এবং ২৩ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তৃতীয় স্থান হিসেবে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নিজগাঁও গ্রামের লন্ডন প্রবাসি আব্দুল আজিজের বাড়িতে নিস্পত্তির জন্য বৈঠক ছিল। কিন্তু অন্য উপজেলায় বিচার হওয়ার কারণে উপস্থিত হতে তার পক্ষকে বাধা দেন চেয়ারম্যান রুহেল। ওই বৈঠকে বৃহত্তর সিলেটের গণ্যমান্য শালিস ব্যক্তিরা অপেক্ষায়ও করেছিলেন। কিন্তু নুর ইসলাম পক্ষের লোকজন বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে অন্যত্র প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে বিস্তস্থ সূত্রে জানা গেছে।
তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন মঙ্গলবার আছরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে হাজী মখলিছ মিয়াকে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ি নুর ইসলামের পক্ষ দা, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এতে মখলিস মিয়া ঘটনাস্থালে মারা যান। পরে উভয় পকক্ফের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে নুর ইসলাম পক্ষের ওয়ারিছ আলী গুরুত্বর আহত হলে তাকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনিও মৃত্যু বরণ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ রুহেলকে মামলায় আসামী না করার জন্য একটি চিহ্নিত দালাল চক্র নানাভাবে চেষ্টা তদবির করে। এতে ব্যর্থ হয়ে এ চক্রটি চরমভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ২টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় থম থমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।