নবীগঞ্জে ভাতাসুবিধাভোগীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২০

প্রতিনিধি/নবীগঞ্জঃঃ

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার বয়স্ক ভাতা ও সুবিধাভোগীদের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সদস্য খালেদ আহমদ জজ এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বাজার এলাকায় বিভিন্ন চা- ষ্টালে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনা ও তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে সুবিধাভোগীদের মধ্যে।

 

অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খালেদ আহমদ জজ । তিনি সরকার দলীয় যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ভাতা গ্রহীতাদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এমনকি তার বিরোদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না! কারণ সে বিভিন্ন লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করেছে মর্মে অবিযোগও পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার বয়স্ক ভাতার সুবিধাভোগী আউশকান্দি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ৩৯ জন নারী- পুরুষ ও মৃত ব্যক্তি সহ অনেকের টাকা অর্থ বছর ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত ২ বছরের এককালীন জনপ্রতি ১২ হাজার টাকা করে মোট ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংক আউশকান্দি শাখা হইতে গত মাসের ৮জুন মেম্বার খালেদ আহমদ জজ অনিয়মের মাধ্যমে উত্তোলন করে তার পকেটস্থ করেন।

 

 

এ খবর অনেক সুবিধাভোগীদের মধ্যে জানাজানি হলে এবং মেম্বার সুবিধাভোগীদের ম্যানেজ করার প্রাণপন চেষ্টায় লিপ্ত হন। এর মধ্যে সুবিধাভোগী দেওতৈল গ্রামের মৃত আব্দুল গনীর স্ত্রী কনা বিবিকে ১২হাজার টাকার মধ্যে ৪হাজার ৫শ টাকা, মৃত কাছা মিয়ার স্ত্রী রুপজান বিবিকে ৪হাজার ৫শত টাকা, মৃত ছয়েফ উল্লাহর পুত্র ছায়াদ মিয়া ও মৃত আরিছ উল্লার পুত্র কউছর মিয়াকে ৪হাজার ৫শ টাকা করে দেয় মেম্বার খালেদ। পরবর্তীতে এই দুই সুবিধাভোগী সোনালী ব্যাংক আউশকান্দি শাখায় যোগাযোগ করলে তারা জানতে পারেন যে, তাদেও প্রত্যেকেই নামে ১২ হাজার টাকা করে ৩৯ জনের টাকা সহ মোট ৪লক্ষ ৬৮হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে মেম্বার। এদিকে অপর সুবিধাভোগী দেওতৈল গ্রামের মৃত ছরকুম উল্লাহর পুত্র লাল মিয়াকে ১২ হাজার টাকার বদলে ৪ হাজার ৫শ টাকা চলতি মাসের ৩ তারিখে দেয় বলে জানা গেছে।

 

সুবিধাভোগী মৃত আব্দুল জব্বারের স্ত্রী হালিমা খাতুন সহ আরো অনেকেই ভাতার কোন টাকা পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে দেওতৈল গ্রামের মৃত নুর মিয়ার মৃত স্ত্রী হেনা বেগম সুবিধাভোগীর তালিকা নং ১৫৯ ও বই নং ৯৮১৬ এই মৃত মহিলার ভাতার বই ব্যাংকে জমা দিয়ে ও তাকে জীবিত দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেন বলে মেম্বারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে। ইউপি মেম্বার খালেদ আহমদ জজ কিভাবে সোনালী ব্যাংক আউশকান্দি শাখা থেকে সুবিধাভোগী ৩৯ জনের ভাতার বই জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছে এমন প্রশ্ন জনমনে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংক আউশকান্দি শাখার ম্যানাজার ওমর চন্দ্র দাশ তালুকদার বলেন, মেম্বারের কাছে টাকা দেয়ার সুযোগ নেই, আমরা প্রত্যেক ভাতা সুবিধাভোগীদের কাছে ভাতার টাকা প্রদান করেছি। তবে, ২/১জন সুবিধাভোগীদের অনুপস্থিতিতে হয়তো মেম্বারের নিকট দেয়া হয়েছে একথাও তিনি স্বীকার করেন। এবং মৃত ব্যক্তির নামে যে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি তা অস্বীকার করেন৷ সুবিধাভোগী ছায়াদ মিয়া সহ আরো অনেকেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেম্বার আমাকে প্রথমে ৪হাজার ৫শত টাকা দেন এবং পরবর্তীতে আমরা প্রতিবাদ জানালে অনেকের পুরো টাকা দেয়, আবার অনেকেরই কোন টাকা দেননি৷

 

এ ব্যাপারে সুবিধাভোগী কনা বিবি বলেন, মেম্বার খালেদ ৪হাজার ৫শ টাকা দিয়েছেন, মিঠাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর পুত্র আব্দুল গফুর বলেন, তালিকায় ১৩১ নং সিরিয়ালে আমার নাম থাকলেও আমাকে কোন টাকাই কেউ দেয় নাই। এভাবে অনেকেরই অভিযোগ মেম্বার এই বিরুদ্ধে রয়েছে৷

 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেম্বার খালেদ আহমদ জজ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়ে খোঁজ- খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Spread the love