ছাতকে জুটন’র কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০

ছাতকে জুটন’র কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ

প্রতিনিধি/ছাতকঃঃ
ছাতকে ডাকাতি-মাদকসহ একাধিক মামলার আসামী জিসান আহমেদ জুটন নামের এক ব্যক্তিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে সীমান্ত অঞ্চলের সাধারন মানুষ। তার সন্দেহমুলক কর্মকান্ড অতিষ্ঠ করে তুলেছে ওই অঞ্চলের মানুষকে। বহুরূপী ওই ব্যক্তি একেক সময় একেক পরিচয়ে নিজেকে উপস্থাপন করায় জুটনকে নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।

 

এক পর্যায়ে তাকে ডেকে এনে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য বলেন এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এ নিয়ে জুটন ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন জানান, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিশকাটালী গ্রামের বাচ্চু মিয়া বেপারী ওরফে ভানুর পুত্র ঝুটন মিয়া বেপারী ক’বছর আগে আগন্তক হিসেবে ছাতক উপজেলা ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ছনবাড়ী এলাকায় অবস্থান নেয়। অতি অসহায়ত্বের কারনে ওই সময় তাকে এলাকার লোকজন আশ্রয়সহ বিভিন্ন সহায়তা করেছিল। তখন নিজেকে একজন কাবরাজ বলেও দাবী করতো জুটন।

 

কিন্তু বছর গড়াতে না গড়াতেই সে পেয়ে যায় আলাদিনের আশ্চার্য় চেরাগ। হঠাৎ অর্থ-বিত্তে বলিয়ান হয়ে উঠে সে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনদের ভাবিয়ে তুলে। সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে এলাকার লোকজন। ওই সময় নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক, র‌্যাবের সোর্স, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সীমান্ত অঞ্চল ছনবাড়ী ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় দাপটের সাথে চলতে থাকে জুটন ব্যাপারী।

 

সময়ের সাথে তার নিজের নামেও পরিবর্তন এনে হয়ে উঠে জিসান আহমদ জুটন। তার দাপুটে চলাফেরা ও প্রভাবের কাছে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে স্থানীয় লোকজন। তার বেপরোয়া চলাফেরা ও স্থায়ী বসবাস করার বিষয়টি এলাকার মানুষের মধ্যে সন্দেহের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। অবশেষে সন্দেহের অবসান ঘটে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে। হঠাৎ একদিন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ এসে ছনবাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

 

এসময় উৎসুক জনতা জুটনের অপরাধ জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, জুটন ডাকাতিসহ একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। দীর্ঘদিন ধরে কুখ্যাত ডাকাত জুটনকে খুজছিল পুলিশ। অবশেষে ছাতকের সীমান্ত অঞ্চলে তার অবস্থান জেনে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই নাজমুল হোসেন অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।

 

সীমান্ত এলাকায় লুকিয়ে থাকা ও তার গ্রেফতারের খবর ২২ ফেব্রুয়ারী জুটনের হাতকরা পড়া ছবিসহ ‘গ্রেফতার হলো জুটন ডাকাত’ শিরোনামে জাগো জনতা ও কালেরকণ্ঠ পত্রিকাসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ফলাও আকারে ছাপা হয়। তার বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় (মামলা নং ১৪/১৭), হাইমচর থানা (মামলা নং ৪/১১) ডাকাতি ও মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় গা ঢাকা দিতে জুটন বেপারী সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান নিয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে সে আবারো ফিরে আসে সীমান্ত অঞ্চলে।

 

ইউপি সদস্য লাল মিয়াসহ স্থানীয় জফির মিয়া, ইলিয়াছ আলী, এড. জাহাঙ্গির আলম রাসেল, সুমন মিয়া, আব্দুল হকসহ লোকজন জানান, জামিনে এসে সে নিজেকে একটি পাক্ষিক পত্রিকার বিভাগীয় প্রতিনিধির পরিচয়ে তার অবস্থান আবারো দৃঢ় করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার ফিরে আসাকে স্থানীয় লোকজন মেনে নিতে পারছিলেন না। পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন ডাকাতকে এলাকায় স্থান না দেয়ার সিদ্ধান্তে গত ২২জুন ছনবাড়ী বাজারে স্থানীয় লোকজন তাকে ডেকে এনে এলাকা ছাড়ার কথা বললে জুটনের সাথে স্থানীদের উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডা ঘটে।

 

এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে ইউপি সদস্য লাল মিয়াসহ ৭জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে জুটন বেপারী। ২৯ জুন অভিযোগটি ছাতক থানায় সাধারন ডায়রী(নং-১১৯২) হিসেবে নেয়া হয়। অভিযোগটি সরজমিন তদন্ত করে ছাতক থানার এএসআই উছমান গনি নন এফ আই আর প্রসিকিউশন (নং-৬৯) হিসেবে আদালতে পেরন করেন। তদন্ত প্রতিবেদনেও তার বিরুদ্ধে এসব মামলা ও সীমান্ত অঞ্চলে আত্ম গোপনে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Spread the love

আর্কাইভ

July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031