বুলবুল আহমদ/নবীগঞ্জঃঃ
বহুল আলোচিত সমালোচিত আওয়ামীলীগ নেতা কামাল হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্র আদালতের নির্দেশে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল (২০ আগষ্ট) বৃহস্পতিবার বিকালে কামাল হত্যাকান্ডের গ্রেফতারকৃত আসামীদের ৭ দিন রিমান্ড শেষে কামালকে হত্যা করে অস্র কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সে সব অস্র উদ্ধারে পুলিশ খুনীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খুনিদের স্বীকারোক্তিমূলক কামালকে হত্যা করে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র পানিতে ফেলে দেয়। তারই প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পৌচ্ছে ৩টি ধারালো রামদা, ১টি কিরিচ, ১টি লম্বা চাকু ও দেশীয় অস্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার এস.আই কামাল আহমদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ফরিদ, জুনেদ, সাইফুল সহ খুনিদের সঙ্গে নিয়ে পানি থেকে ঐ অস্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে হাজারো মানুষ ভিড় জমান ঘটনাটি দেখতে।
উল্লেখ্য যে, গত ২২ জুলাই ১১ টায় ঐ স্থানে কামালকে নিমর্মভাবে খুন করা হয়। এ হত্যাকান্ডে এলাকা সর্ব সাধারনের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এতে গত ৫ আগষ্ট ১২টায় এলাকাবাসী বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন।
কামাল হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে গত ৪ আগষ্ট ডিবির সাব ইন্সপেক্টর আজাদ ও আবুলের নেতৃত্বে কামাল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আরও ২ জনসহ মোট ১৫ জন ঘাতককে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে, ২০১৭ সালে কামালের চাচাতো ভাই ইসলাম উদ্দিন খুন হলে সেই মামলা পরিচালনা করেন কামাল। আর সে ঐ মামলার সাক্ষী ও পরিচালনা করায় চেয়ারম্যান হাবিবুরের নেতৃত্বে কামালকে নির্মমভাবে খুন করে ঘাতকরা। এ সংক্রান্ত তথ্যাদি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানান হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যাহ। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ৭নং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নির্দেশে আ’লীগ নেতা কামালকে খুন করেছে বলে তথ্য প্রদান করে। এছাড়া জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত (৫) এ ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে গ্রেফতারকৃত আসামীগন কামাল হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে আদালতকে জানায় তারা। আসামীগন তাদের জবানবন্দিতে আরও বলেন, কামালকে হত্যা করার এক সপ্তাহ আগে শিবগঞ্জ বাজারে চেয়ারম্যানের বাসায় রাত আনুমানিক ১১টায় আবিদ, ফারুক, ফরিদ, রফিক সহ আমরা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হই। তখন ৭নং বড়ইউরি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান আমাদেরকে বলেন, তোমরা কামালকে হত্যা করো নতুবা আমাকে হত্যা করো। যে কোন একজনকে তুমরা খুন করতে হবে। কেননা আমি এই কামালের জন্য ঠিক মতো শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারতেছি না। মাঝে মধ্যে কামালের জন্য আমার দম বন্ধ হয়ে আসে এবং ভবিষ্যতেও সে আমার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী। যে ভাবেই হোক তাকে তোমরা ঈদের আগেই শেষ করে দাও।
ঐ সব তথ্য আসামীরা জবানবন্দিতে আদালতকে অবগত করলে ও কামালকে যে অস্র দিয়ে খুন করা হয়েছিল তা উদ্বারে বাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামীদেরকে সরেজমিনে নিয়ে অস্র উদ্ধারের নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে ঐ অস্র উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খুনি চেয়ারম্যান এখনও অধরা রয়েছে।