শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়ন কীভাবে

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২০

শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়ন কীভাবে

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

করোনা মহামারীর কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর (পিইসি) মতো অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও এবার হবে না। ফলে এসব শিক্ষার্থীকে পরবর্তী ক্লাসে কীভাবে উত্তীর্ণ করা যায়, সে পদ্ধতি খুঁজছে শিক্ষা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০২০ সালের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এ ছাড়া আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদও বাড়িয়েছে সরকার।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, করোনা মহামারীর মধ্যে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে করণীয় জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

 

এর আগে মহামারীর মধ্যে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে পিইসি পরীক্ষা না নিয়ে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে না হলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষায় বসতে হবে কিনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নোয়াখালীতে বিদ্যুতের উপকারভোগী এক ছাত্রীর বক্তব্য শোনার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যা কিছু করছি সব তোমাদের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। এখন করোনাকাল চলছে। তোমরা স্কুল করতে পারছ না। তার পরও বই আছে। তোমরা ভালো করে পড়াশোনা করো। পরীক্ষা তো হবে না, হয়তো প্রমোশন দিতে হবে। আমরা দেখছি কী করা যায়।

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনার কারণে ছেলেমেয়েরা আজ স্কুলে যেতে পারছে না। ফলে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারছে না। (এখন) অনলাইনে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে টেলিভিশনে। তোমরা সেখানে মনোযোগ দেবে। করোনাকালে প্রচুর সময় পাচ্ছ। তোমাদের পড়ার সুযোগ হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দেশে নয়, সারাবিশ্বেই এ অবস্থা।

 

 

মহামারী শুরুর আগেই এবারের এসএসসি পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় বিশেষ ব্যবস্থায় ফল ঘোষণা করে এখন অনলাইনে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টেলিভিশন ও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। যদিও নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এখনো এসব ডিজিটাল কার্যক্রমের বাইরে রয়ে গেছে।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এবার ১৪ লাখের মতো শিক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। এর পর তারা স্নাতক পর্যায়ের লেখাপড়ায় যাবে। পরীক্ষা নেওয়া না গেলে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি তৈরির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে। এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পর্যায়ের উচ্চশিক্ষার পথ নির্ধারিত হয়। সে কারণে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল।

 

জানা গেছে, মহামারীকালে ও পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং অধীন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে গতকাল ভার্চুয়াল সভা করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, সে ক্ষেত্রে এইচএসসি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণের বিষয়ে মূল্যায়ন পদ্ধতি কী হতে পারে সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার এইচএসসিসহ মাধ্যমিকের কোনো পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না- এমনটি ধরে নিয়েই ওই পরিকল্পনা করতে হবে।

 

মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যেই এ ছুটির মেয়াদ ৩ অক্টোবর পর্যন্ত আবার বাড়ানো হলো। তবে গত সোমবার কওমি মাদ্রাসাগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ডিগ্রি ও মাস্টার্স পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

Spread the love

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031