ওসমানীনগরে কাজী আব্দুল আহাদের কাজ বাল্যবিয়ে পড়ানো!

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২০

ওসমানীনগরে কাজী আব্দুল আহাদের কাজ বাল্যবিয়ে পড়ানো!

প্রতিনিধি/ওসমানীনগরঃঃ

ওসমানীনগরে এক কাজীর বিরুদ্ধে বাল্য বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার (তাজপুর ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) কাজী আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ জমা পড়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

 

৩১ আগস্ট তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভায় কাজীর এমন কর্মকান্ডের জন্য রেজুলেশন করে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিনো হয়েছে।  জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ওসমানীনগরকে বাল্যবিবাহমূক্ত উপজেলা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে উপজেলার কোথাও বাল্য বিবাহের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি বাল্যবিয়ে পড়িয়েছেন তাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত কাজী আবদুল আহাদ। টাকার বিনিময়ে তিনি আসল জন্ম সনদকে গায়েব করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে জন্ম সনদ তৈরী করে এনে এক স্কুল ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভায় কাজীর বাল্য বিয়ে পড়ানোসহ নানা অনিয়ম নিয়ে আলোচনা করেন চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। তার অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রেজুলেশন করে তা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন তারা।

 

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ওই কাজী তাজপুর মঙ্গল চন্ডী নিশিকান্ত সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী উত্তর মজলিসপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়ে জহুরা খাতুনের বিয়ে পড়ানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছেন। মঙ্গলচন্ডী নিশি কান্ত সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, জহুরা খাতুন ২০১৯ সালের জেএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। ভর্তির রেকর্ড অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ২২/০২/২০০৪।

 

অন্যদিকে, গত ১০ জুলাই তাজপুর ইউনিয়নের কাশিপাড়া গ্রামের আতাউর রহমানের অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়ে লাভলী বেগমের বিয়ে পড়ান। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় তাৎক্ষণিক কাবিন রেজিস্ট্রি না করে শুধু ফি নিয়ে চলে যান। ইউনিয়ন সচিবের সাথে রফাদফা করে বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ আনার পর রেজিস্ট্রি করার কথা ছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার কাবিন রেজিস্ট্রির জন্য নেয়া দেড় হাজার টাকা ফেরৎ দিয়ে যান কাজীর সহকারী সেলিম আহমদ। পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে এলাকা থেকে চলে যেতে বলে। অভিযোগ রয়েছে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত কাজীর দায়িত্ব নিয়েছেন আব্দুল আহাদ। আর সেই টাকা উত্তোলনে তিনি সব ধরণের অনিয়ম অব্যাহত রেখেছেন। 

 

এ ব্যাপারে লাভলী বেগমের স্বামী হায়দর আলী বলেন, আমাদের বিয়ের জন্য জন্ম নিবন্ধন দেখালে তিনি বলেন আমাদের বিয়ে হবে। আমাদের বিয়ে পড়িয়ে কাবিনের জন্য ১৫শ টাকা ফি নেন। আরো একজন নতুন জন্ম সনদের জন্য ১হাজার টাকা নেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার কাজী ১৫শ টাকা ফেরৎ দিয়ে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলে। এলাকা না ছাড়লে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।

 

তাজপুর ইউনিয়নের অতিরিক্ত নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার কাজী আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা কোন বাল্য বিবাহ পড়াইনি। জন্ম নিবন্ধন দেখেই আমরা বিয়ে পড়িয়ে থাকি।

 

ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ তাহমিনা আক্তার বলেন, বাল্য বিয়ে সংক্রান্ত ইউনিয়ন পরিষদের একটি রেজুলেশন পেয়েছি এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031