বিশ্বনাথে ফাতেমার মৃত্যুর দুই মাসেও ময়না তদন্ত রিপোর্ট অসেনি থানায়!

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০

বিশ্বনাথে ফাতেমার মৃত্যুর দুই মাসেও ময়না তদন্ত রিপোর্ট অসেনি থানায়!
প্রতিনিধি/বিশ্বনাথঃঃ
দীর্ঘ ৫৯দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও সিলেট ওসমানী হাসপাতাল থেকে একটি ময়না তদন্তের রির্পোট বিশ্বনাথ থানায় পৌছেনি । যে কারণে একজন নারীর রহস্যজনক মৃত্যুর মামলাটি আইনের ফাঁকে আটকা পড়ে আছে। নিহতের পরিবার গরীব হওয়ায় থানা পুলিশও ময়না তদন্তের রির্পোট সংগ্রহে তেমন আগ্রহী নয়। ফলে ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ফাতেমা বেগমের লাশ উদ্ধার করার পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনয়া তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়না তদন্তের রির্পোট না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন বার ময়না তদন্তের রির্পোটের  জন্য আবেদন করা হলেও আমরা এখনো রির্পেটি হাতে পাইন। যার কারণে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে বিলম্ব হচ্ছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২জুলাই বিশ্বনাথ  উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখের গাঁও গ্রামের সাইদ আলীর পুত্র জামিল আহমদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২১) এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ফাতেমার স্বামীর পরিবার ঘটনাটিকে আত্তহত্যা বলে প্রচার করলে ফাতেমার ভাই রোবেল আহমদসহ মেয়েটির আত্মীয় স্বজনরা তাকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। ২জুলাই ফাতেমার মৃত্যুর পর আত্মীয় স্বজনরা গিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পান এবং নাকে মুখে রক্ত বের হতে থাকে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে। এই ঘটনার পর ফাতেমা বেগমের ভাই রুবেল আহমদ বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগটি আমলে নেয়নি। ময়না তদন্তের পর ফাতেমার লাশ স্বামীর বাড়ীতে দাফন না করে এবং ফাতেমার মা বাবাকে না জানিয়ে পুলিশের সহায়তা সিলেট নগরীর মানিকপীর টিলায় তড়িগড়ি করে দাফন করা হয়। এতে ঘটনা আরো বেশি রহস্যের সৃষ্টি হয়।
২০১৮সালের ১৬আগষ্ট রামপাশা ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের ইলিয়াছ আলীর মেয়ে ফাতেমা বেগমকে দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁও গ্রামের সাইদ আলীর পুত্র জামিল আহমদ এর সাথে বিবাহ দেয়া হয়। বিবাহ দেয়ার পর জামিল যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শারীরিকভাবে মারপিটসহ বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
এ নিয়ে একাধিকবার শালিশ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনমতেও ফাতেমার উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। জামিল আহমদ একজন চালাক চতুর প্রকৃতির যুবক হয়। সে নিজেকে চট্টগ্রামে ও ঢাকায় বড় চাকুরী করেছে মর্মে পরিচয় দিয়ে ফাতেমাকে বিয়ে করে এবং প্রায় সময় বাহিরে থাকে।
শালিশ বৈঠকের একজন মুরব্বী জানান, ফাতেমা বেগমকে জামিলের পিতা সাইদ আলী কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু মেয়েটি রাজী না হওয়ায় সাইদ আলী কয়েকদফা মেয়েটি অত্যাচার নির্যাতন করে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক সালিশ বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু থানা পুলিশ বাদী রুবেলের কথা কর্ণপাত করছে না। ফাতেমার ভাই অসহায় রুবেল আহমদ ময়না তদন্তের রিপোর্টের জন্য ওসমানী হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে চরম হয়রানীর শিকার হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসলে পুলিশ মামলার কোন পদক্ষেপ নেবে না বলে জানিয়েছে।
অসহায় রুবেল আহমদ তার বোনের বিচারের জন্য সিলেটের পুলিশ সুপার ও ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930