সিলেট ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
সিলেটের বিয়ানীবাজার আওয়ামী লীগ নেতা মাতাব উদ্দিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় সাড়ে ৪ বছর পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহীম মিয়া। রায়ে মামলার ৯ আসামীর মধ্যে একজনকে মৃত্যুদন্ড, একজনকে যাবজ্জীবন ও আরও ৫ জনকে ৩ বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্তদের অর্থদন্ডও দিয়েছেন আদালত। মামলার অপর দুই আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যে রায় ও আদেশ প্রদান করেছেন তাতে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। বুধবার( ১১ নভেম্বর) আদালত এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত মামলার অপর দু’আসামী আব্দুল মুমিত সুমন ও রায়হান আহমদ চৌধুরীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল ৩ টা ৫৫ মিনিটে মাতাব উদ্দিন হত্যা মামলার রায় প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। ৪টা ১০ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন বিচারক মো. ইব্রাহীম মিয়া। মামলার রায়ে পলাতক আসামী রুবেল হোসেনকে (২২) মৃত্যুদন্ড, অপর পলাতক আসামী আব্দুল ফাত্তাহকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এছাড়া, মামলার অপর ৫ আসামী রাজন আহমদ, লিমন আহমদ, বাবুল আহমদ, শাহিন আহমদ ও মঞ্জুর আহমদকে ৩ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন আদালত।
জানা যায়, ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৬ সালের ২২ জুন সকাল ১১ টায় উপজেলার পূর্ব আলীনগর গ্রামের রাস্তার উপর প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় ঘটনাস্থলে খুন হন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মাতাব উদ্দিন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন ৮ জনকে আটক করে। এ ঘটনার পরদিন নিহতের ভাতিজা আলী আকবর বাবুল বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় ৮ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৫, ধারা ১৪৩, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৬, ৩০২, ১১৪, ৩৪ দণ্ডবিধি। এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন বিয়ানীবাজার থানার তৎকালীন এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা ও পরে ছিলেন সিআইডি’র সিলেট জোনের এসআই মো. আবুল কালাম।
এদিকে, সিআইডি ৪ মাস তদন্ত শেষে একই বছরের ১০ নভেম্বর এজাহারভুক্ত ৮ জন ও ঘটনার দিন এজাহার বহির্ভূত আটক রায়হান আহমদ চৌধুরীসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ১৭ নভেম্বর সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী আদালত নং-৪) আদালতে অভিযোগপত্র (নং ১৫৯) দাখিল করেন। এরপর মামলার অভিযোগ গঠন শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানী ও যুক্তি-তর্ক শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
এদিকে, বাদিপক্ষের আইনজীবী গোলাম ইয়াহইয়া চৌধুরী সুহেল বলেন, এই রায়ে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তারা ছাড়া পেয়েছে। এ নিয়ে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো এবং ন্যায় বিচার পাবো।