মৃত্যুর ২৪দিন পর স্বজনদের চোখের জলে শেষ বিদায় ফয়সলের

প্রকাশিত: ১২:০৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২০

 মৃত্যুর ২৪দিন পর স্বজনদের চোখের জলে শেষ বিদায় ফয়সলের
Spread the love

৭৮ Views

 

অন্তরা চক্রবর্তীঃঃ

তুর্কী থেকে গ্রিসে যাত্রাপথে বরফের পাহাড়ে মৃত্যুবরণকারী সিলেটের বালাগঞ্জের এনামুল এহসান জায়গীরদার ফয়সলের (৩০) লাশ শেষ বারের মত দেখতে পেলেন তার স্বজনরা। দির্ঘ প্রতিক্ষার পর গ্রিসে যাওয়ার পথে বরফে চাপা পরে মারা যাওয়ার ২৪দিন এবং লাশ উদ্ধারের ১৯ দিন পর ফয়ছলের লাশ দেশে আসে।

 

রবিবার বিকেল ৫টার দিকে একটি ফ্লাইটে লাশ বন্দি কফিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছলে স্বজনরা লাশ গ্রহণ করে এ্যাম্বলেন্স যোগে রাত দেড়টার দিকে বালাগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছান। এসময় কফিন ঘিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফয়ছলের মা-বাবাসহ স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মহুদ আহমদ জায়গীরদার ও খেলা বেগম চৌধুরী দম্পত্তির ছেলে ফয়ছল। ৩ভাই ১বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়।

 

গতকাল সোমবার বেলা ২টায় বোয়ালজুড় বাজার ঈদগাহ মাঠে কয়েক সহস্রাধিক মানুষের অংশ গ্রহণে জানাজার নামাজ শেষে চোখের জলে শেষ বিদায় দিয়ে পারিবারিক করবস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

 

শেষ বারের মত এক নজর লাশ দেখতে আগ থেকেই ঈদগাহ মাঠে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। ফয়ছলের লাশ দেশে আনার বিষয়ে মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে সহযোগীতায় করায় জানাজার পূর্ব মুহুর্তে রাজাপুর গ্রামের শফিকুর রহমান শফিক ও ফয়ছলের পরিবারের সদস্যরা দূতাবাস কর্মকর্তাগণ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

 

এসময় বিদেশ যাত্রায় সবাইকে সতর্ককতা অবলম্বন করার জন্য বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনহার মিয়া সবার প্রতি আহবান জানান। গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত মো. জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- বাংলাদেশ দুতাবাসের মানবিক আবেদন সাড়া দিয়ে গ্রিস প্রশাসন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে। প্রযুক্তির সহযোগীতায় ফয়ছলের লাশ পড়ে থাকা স্থানে তোলা ছবির সূত্র ধরে গ্রিসের আলেকজান্ডার পলি সীমান্তে পাহাড়ী এলাকাটি চিহ্নিত করা হয়।

 

১২ফেব্রুয়ারি বরফের নীচ থেকে হেলিকপ্টার দিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে আলেকজান্ডার পলি নামক হসপিটালে হন্তান্তর করা হয়। ফয়ছলের ছোট ভাই রাজিমুল এহসান জায়গীরদার রুজেল জানান, ৯ফেব্রুয়ারি আমার ভাইয়ের সহযাত্রীরা মৃত্যুর সংবাদটি জানিয়ে মৃত দেহের ছবিগুলো পাঠান। কিন্তু ছবি দেখে কেউ-ই ওই স্থানটি চিহ্নিত করতে না পারায় দুতাবাসের সহযোগীতা কামনা করা হয়।

 

৪ফেব্রুয়ারি দালালের মাধ্যমে তুর্কী থেকে যাত্রা শুরু করে ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রিস সীমান্তে পৌঁছে গ্রিস সময় ২টার দিকে মারা যান তিনি। ৫-৬ বছর পূর্বে ভিসা নিয়ে উমান যান তিনি। মাস ছয়েক পূর্বে তিনি উমান থেকে ইরাক হয়ে তুর্কী যান। সর্বশেষ ৪ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ফোন করে তার জন্য দোয়া করার কথা বললেও দালালের মাধ্যমে গ্রিসে যাওয়ার বিষয়টি জানাননি ফয়সল।


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930