সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
ক্রিকেটার নাসির হোসাইন, কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মি, তামিমার মা সুমি আক্তারের তালাক জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় বিচার শুরু হবে কিনা এ বিষয়ে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত জানাবেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার অ্যাডিশনাল মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন চার্জগঠনের বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করেন।
শুনানিতে আসামিদের পক্ষে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু এবং বাদীপক্ষে ইশরাত হাসান চার্জগঠনের পক্ষে প্রার্থনা করে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আগামি ৯ ফেব্রুয়ারি চার্জের বিষয়ে আদেশের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
এদিন শুনানিকালে তিন আসামিই আদালতে হাজির হন এবং তারা আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর আগে মামলাটিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমানের দাখিল করা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ৩১ অক্টোবর আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। সে অনুযায়ী আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন জামিন গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ার ফলে তামিমা তাম্মী এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন।
দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ। এছাড়া জেনে শুনে তামিমাকে নাসিরের সেঙ্গে বিয়ে দেয়ায় তামিমার মা সুমি আক্তারও দোষী।
প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় স্বামী বা স্ত্রী থাকার পরও পুনরায় বিবাহ করা, ৪৯৭ ধারায় ব্যাবিচার, ৫০০ ধারায় মানহানি, ৪৬৮ ধারায় প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল তালাকের নোটিশ সৃজন, ৪৭১ ধারায় জাল জেনেও তালাকের নোটিশ ব্যবহার এবং ৪৯৮ ধারায় অপরাধজনক উদ্দেশ্যে বিবাহিত নারীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।
যার মধ্যে স্বামী বা স্ত্রী থাকার পরও পুনরায় বিবাহ করার ৪৯৪ ধারায় সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছেন। গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি তালাক না হওয়া অন্যের স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন এবং তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রাকিব হাসান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তোবা হাসান নামে ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা বাদীর নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে জানতে পারেন এবং তিনি হতবাক হন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। আসামি নাসির বাদীকে ফোন করে জানান, যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ।
আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার।’ মামলায় আরও বলা হয়, তাম্মি ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশু কন্যা মানসিক বিপর্যন্ত। আসামিদের এমন কার্যকলাপে বাদী ও তার শিশু সন্তারের জন্য চরমভাবে মানহানিকর।