করোনা ভাইরাসকে চেপে রেখেছিল সরকার‘:মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২০

করোনা ভাইরাসকে চেপে রেখেছিল সরকার‘:মির্জা ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্টঃঃ

মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সরকার বাংলাদেশে  করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শনাক্তের ঘটনা এতদিন গোপন করে রেখেছিল। সোমবার রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন মন্তব্য প্রকাশ করে তিনি কোভিড-১৯ নামে নতুন এ রোগ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলেও সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন,আমাদের সরকার এই করোনাভাইরাস নিয়ে এতদিন কোনো কিছুই বলেনি এবং তারা খুঁজেও পায়নি। কী কারণে খুঁজে পায়নি জানি না। হঠাৎ করে কালকে খোঁজে পেয়েছে। এটা কী এমন যে যখন বিদেশি অতিথিরা আসতে অপারগতা প্রকাশ করলেন তখনই এই তিন জনের নাম আসল? আমি জানি না।তবে আমার ধারণা, তারা পুরো জিনিসটাকে গোপন করার চেষ্টা করেছে। আমাদের এই রোগ বাংলাদেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকেরই ধারণা এবং সেই ধারণাগুলো সত্যিকার অর্থে এখন প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি যে, এই বিষয়ে যথাযথ যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেই ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়নি।সকল বন্দরে পর্যাপ্ত ‘স্ক্যানিংয়ের’ ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।একইসঙ্গে এই রোগের ট্রিটমেন্টের জন্যবিশেষায়িত হাসপাতাল সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার যাতে করে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতে পারেন। আমরা মনে করি যে, এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের লেখা ‘প্রগতি ও সত্যের সন্ধানে’ ও ‘মূল্যবোধ ও অবক্ষয়ের খণ্ডচিত্র’ নামে দুটি বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এ অনুষ্ঠান হয়। ‘দি ইউনিভার্সেল একাডেমি’ বই দুটি প্রকাশ করেছে।

ফখরুল বলেন, সরকার করোনাভাইরাস নিয়ে এতদিন কোনো কিছুই বলেনি। তারা খুঁজেও পায়নি, কি কারণে পায়নি জানি না। হঠাৎ করে কালকে (রোববার) খুঁজে পেয়েছে। যখন বিদেশি অতিথিরা (মুজিববর্ষ উপলক্ষে) বাংলাদেশে আসতে অপারগতা প্রকাশ করলেন তখনই এই তিনজনের নাম আসল। আমার ধারণা তারা পুরো জিনিসটাকে গোপন করার চেষ্টা করেছে। এই রোগ বাংলাদেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকেরই ধারণা। সেই ধারণাগুলো সত্যিকার অর্থে এখন প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে এ ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মুক্ত আছেন, জামিন পেয়েছেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, একই মামলায় বিচার বিভাগ যখন অন্যদের মুক্তি দেন তখন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন না কেন?পিরোজপুরের জজ বদলির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কোথায় বিচার বিভাগ? আইন সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করে। সে অধিকারগুলো আজ কোথায়? গণতন্ত্রই যদি না থাকে, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি ধ্বংস করে দেয়া হয় তাহলে সেখানে কিছুই গড়ে উঠে না। আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম সেই স্বপ্ন সম্পূর্ণভাবে চুরমার হয়ে গেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো কী ধরনের অশালীন কথাবার্তা। স্বয়ং একজন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৪০০ টাকার মেজর তার একদিনের একটা বাঁশির ফুঁতে স্বাধীনতা আসেনি’। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, একজন মেজরের বাঁশির ফুঁতে সমগ্র জাতি স্বাধীনতার জন্য এগিয়ে এসেছিল। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আপনারা তখন কেউ পলায়ন করেছিলেন, কেউ আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

তিনি বলেন, অন্যকে অপমান করার মধ্য দিয়ে মহত্ব গড়ে উঠে না। আজকে স্বাধীনতাযুদ্ধে যাদের অবদান আছে তাদের স্বীকার করে নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি দুর্ভাগ্যক্রমে তারা (আওয়ামী লীগ) অন্য কাউকে স্বীকার করতে চায় না। না স্বীকার করতে চান তাজউদ্দিন আহমেদকে, জেনারেল ওসমানীকে, না শহীদ জিয়াউর রহমানকে। অন্যদের কথা বাদই দিলাম।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে লেখক ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুসতাহিদুর রহমান, দি ডেইলি ফাইন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেস প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ ও প্রকাশক শিহাব উদ্দীন ভুঁইয়া বক্তব্য দেন।

Spread the love

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031