সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
প্রতিনিধি/বরিশালঃঃ
বরিশাল ডাকাত আতঙ্কে মাঝরাতে হঠাৎ মাইকিং শুনে ঘুম ভেঙে আতঙ্কিত ছুটোছুটি করেছেন বরিশাল জেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ। এটাকে প্রতিপক্ষকে হেনস্থা কৌশল বলছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। আর পুলিশ বলছেন, সবাইকে সতর্ক থাকতে। মাইকিং এর বিষয়টি এভাবে কেন হলো আমরা তদন্ত করে দেখছি। ৭ ডিসেম্বর সকালে বরিশাল শহরের দরগাবাড়ি, খান সড়ক, কাউনিয়া বিসিকসহ আশেপাশের এলাকা এবং শহরের বাইরে চরামদ্দি, কাটাদিয়া, কড়াপুর, কর্ণকাঠীসহ বিভিন্ন এলাকাবাসী ফোনে অভিযোগ করে জানান, ৬ ডিসেম্বর শেষে গভীর রাতে আনুমানিক দুইটা বা আড়াইটার দিকে এলাকার মসজিদে মাইকিং হয়েছে। সবাইকে ঘুম থেকে জেগে একত্রিত করা হয়েছে। ডাকাত পরেছে, সাবধান হন, ডাকাতি হচ্ছে… ইত্যাদি ঘোষণা দেয়া হয়।
এতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। দরগাবাড়ির বাসিন্দা জোসনা আক্তার বলেন, কাটাদিয়া থেকে রাত তিনটায় আমার ভাইও ফোন করে আমাদের জানান, তাদের এলাকায় মাইকিং চলছে। একই ঘটনা ঘটেছে জেলার দশ উপজেলাতেও। বিষয়টিকে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে দাবী করে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন বরিশালের সদস্য সচিব রফিকুল আলম বলেন, এটা আসলে বলে বিএনপির সভা সমাবেশ বন্ধ করার একটা কৌশলও হতে পারে। তবে যা ই হোক, এটা ভালো ফল বহন করবেনা। একসাথে পুরো জেলায় ডাকতি হতে পারে কি? আর ডাকাতরা কি মাইকিং করে ডাকাতি করবে? তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি করছে এটাও প্রশ্ন ওঠে। সমাজচিন্তক ও পরিবেশবিদ এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, এটা কি হচ্ছে? মানুষকে এভাবে কেন আতঙ্কিত করা হচ্ছে। মসজিদে মসজিদে কেউতো ফোন করে প্রচারণা আদেশ দিয়েছে।
এ রহস্য খুঁজে বের করা জরুরী। বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, এখন পর্যন্ত বরিশাল শহরে ডাকাতির বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। আমরা শুনেছি কেউ কেউ মসজিদে মাইকিং করেছে। সর্বত্র পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যদিও এ পরিস্থিতিতে সবাইকে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কাউকে ডাকাত সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। অপরদিকে ডাকাত আতঙ্কের মাইকিং বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহেল মারুফ বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন, মোড়ে মোড়ে পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে।
মাইকিং সম্পর্কে পুলিশের কাছে পরিষ্কার ম্যাসেজ নেই, তবে মাইকিং হচ্ছে মর্মে তারা জানিয়েছেন। মাইকিং এর বিষয়টি পরিকল্পিত হতে পারে। তাই কাউকে আতংকিত না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরে বরিশালসহ আশপাশের জেলা উপজেলায় মধ্যরাতে ডাকাত আতঙ্কে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকিং এর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জে ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে সংঘবদ্ধ দুস্কৃতীরা।