অসময়ে তরমুজ চাষে সফল মোরেলগঞ্জ শরনখোলার কৃষকরা

প্রকাশিত: ৮:০২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

অসময়ে তরমুজ চাষে সফল মোরেলগঞ্জ শরনখোলার কৃষকরা
Spread the love

১৭ Views

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির/বাগেরহাটঃঃ

অসময়ে তরমুজ চাষে সফল বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ শরনখোলার কৃষকরা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে লাউ বা কুমড়া ঝুলে আছে। কাছে গেলে বোঝা যায় গুনো ও লাইলোনের সুতোর জালে তৈরি বিশেষ মাচায় রসালো তরমুজ ঝুলছে। ○ছোট, বড় ও মাঝারি সাইজের বিভিন্ন রংয়ের তরমুজে দেখলে মন জুড়াবে যে কারও। মাত্র চারমাসেই বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ শরনখোলার কৃষকরা মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের ভাষানন্দল গ্রামের শাহ জাহানের ছেলে কৃষক রাজিব জাহিদুল ইসলামের ঘেরের ভেড়ীতে অসময়ে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে।

 

 

 

শরণখোলা উপজেলার উত্তররাজাপুর-আমতলা গ্রামের কৃষক বিমল চন্দ্র মাঝির ক্ষেতে এমন বাম্পার ফলন হয়েছে। অসময়ের এই তরমুজের দামও ভাল হবে এমন আশা হতদরিদ্র কৃষক বিমল চন্দ্র মাঝির। তিনি বলেন, নিজের জমি-জমা নেই। এক একর জমি বর্গা নিয়ে মাছ ও ধান চাষ করতাম, এতেই মোটামুটি চলে আমাদের সংসার। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ঘেরের পাড়ে অফসিজন বা অমৌসুমী তরমুজের চাষ শুরু করি। তরমুজের বিচি, বাস, কাঠ, লাইলোনের সুতোর জাল, গুনা ও শ্রমিক মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা যে ফল দিয়েছে তাতে এক লক্ষ টাকার উপরে বিক্রি করতে পারব।

 

8 Common Facebook Ad Myths, Debunked

 

তরমুজ শেষ হলে, এই মাচায়ই কুমড়ো, লাউসহ অন্যান্য সবজি চাষ করা যাবে। অসময়ে তরমুজ চাষ সম্পর্কে কৃষক বিমল চন্দ্র মাঝি বলেন, এই চাষটি স্বাভাবিক লাউ-কুমরো চাষের মতই, মাটিতে জৈব ও রাসয়নিক সার দিয়ে বিচি রোপন করতে হয়। পরে গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। যখন বৃষ্টি থাকে না, তখন পানি দিতে হয়। তেমন খরচ না হলেও, যতœ করতে হয় অনেক। তবে তরমুজ চাষে আমাদের সবসময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগণ সহযোগিতা করেছেন। এভাবে কয়েক বছর ভালভাবে চাষ করতে পারল সংসারে স্বচ্ছলতা আসবে বলে দাবি করেন এই কৃষক। বিমল চন্দ্র মাঝির ছেলে বিপুল চন্দ্র মাঝি বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ ক্রয়ের জন্য যোগাযোগ করেছে।

 

 

 

আশাকরি দুই-চারদিনের মধ্যেই আমরা বিক্রি শুরু করতে পারব। শুধু বিমল চন্দ্র মাঝি নয়, ভাল দাম ও চাষাবাদ সহজ হওয়ায় জেলার অনেকেই অফসিজন তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৪১ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪শ কৃষক তরমুজ চাষ করেছেন। আগামী বছরে চাষের জমি ও কৃষক আরও বাড়বে বলে আশা কৃষি বিভাগের। অসীম কুমার তরুয়া নামের আরেক কৃষক বলেন, ৩৩শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। যদি সব মাছের ঘেরের পাড় ও উঁচু জমিতে অফসিজন তরমুজ চাষ করা যায় তাহলে, কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভববান হতে পারে।

 

 

 

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম মনি বলেন, আমরা সব সময় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমাদের ইউনিয়নে অফসিজন তরমুজ চাষিদের সব সময় খোঁজ খবর রাখছি। চাষিদের গাছে কখনও কোন সমস্যা বা রোগব্যাধি দেখা দিলে, দ্রুত আমরা মাঠে এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অফসিজন তরমুজ চাষীদের সহযোগিতা করা হয়েছে।

 

 

 

এই চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কৃষি উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে যার কারণে চাষীরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, আমরা সব সময় কৃষকদের উচ্চমূল্য সম্পন্ন ফসল চাষে উৎসাহ প্রদান করি। এজন্য কারিগরি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হয়। এই কারণে জেলায় দিন দিন অমৌসুমী তরমুজ চাষি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৪শ চাষি ৪১ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করছেন। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

September 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930