ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পালন উপলক্ষ্যে লন্ডনে আর্ন্তজাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ৯:২০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পালন উপলক্ষ্যে লন্ডনে আর্ন্তজাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা

প্রতিনিধি/লন্ডন::

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পালন উপলক্ষে লন্ডনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোঃ আখতারুজ্জামান।সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্যা ইউ কে (DUAUK)-সহ দেশে বিদেশে অবস্থানরত সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতার আহব্বান জানান তিনি। ৬ সেপ্টেম্বর DUAUK কর্তৃক লন্ডনে আয়োজিত ভার্চুয়াল পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য অ্যালামনাইয়ের বৃত্তি প্রদানের উদ্যেগের ভূয়সি প্রশংসাও করেন তিনি। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্যা ইউ কে সংগঠনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ১৫ লক্ষ টাকার একটি স্থায়ী বৃত্তি তহবিল গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ।

 

বৃত্তির পরিমাণ আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। ভার্চুয়ালের মাধ্যমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে অংশ গ্রহন করে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রজীবনে পরিচালিত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ন্যায্য আন্দোলনের কারণে আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের আদেশ প্রদান করা হয়েছিল।দীর্ঘদিন পর সেই বহিস্কার আদেশটি বাতিল করে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব পুনর্বহাল করা এবং বঙ্গবন্ধুকে বিরল সম্মানে ভূষিত করায় তিনি সভার প্রধান অতিথির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।এসময় তিনি DUAUK এর যেকোনো সমাজ কল্যান মূলক উদ্যোগে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডক্টর ইমতিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক ডক্টর ভীষ্মদেব চৌধুরী। উক্ত ভার্চুয়াল সভায় যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশ থেকে শতাধিক অ্যালামনাই যোগদান করেন।

 

সভার সভাপতিত্ব করেন DUAUK – এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি,মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গাউস সুলতান। পরিচালনা করেন অ্যালামনাই এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুর রকীব এফ সি এ। বক্তব্য রাখেন DUAUK-এর প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম সভার সভাপতি হাবিব রহমান, প্রথম সদস্য সচিব মারুফ আহমেদ চৌধুরী, অন্যতম উদ্যোক্তা শাহাগীর বখত ফারুক, সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন, সংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দীন ইকো ,কোষাধক্ষ্য সৈয়দ হামিদুল হক। সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক নীলুফা ইয়াসমিন হাসান। সভার প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডঃ মোঃ আক্তারুজ্জামান ব্যাতিক্রমি আয়োজনের জন্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ইন দ্যা ইউকের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে আমি লন্ডনে সফরের গিয়েছিলাম। সভর কারিন সময়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও DUAUK সংশ্লিষ্টদেরপ্রদত্ত আতিথেয়তা অত্যান্ত প্রশংসনীয়।

 

এসময় আগামী ২০২১ সালে শতবর্ষ অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক, বিশেষত: যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার ক্ষেত্রে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাজ করে যাওয়ার আশ্বাসের জন্য বাংলাদেশের হাইকমিশনার কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক কনফারেন্স কমিটির আহ্বায়ক, অধ্যাপক ডক্টর ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার ছাত্ররা এবং শিক্ষকরা একটি দেশের মুক্তির জন্য জীবন দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার ছাত্ররা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের পতাকা প্রথম উত্তোলন করেছেন। এই বিরল রেকর্ড পৃথিবীর আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনকি শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় থাকা অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, বা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েরও নেই। অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী বলেন, কালের পরিক্রমায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ একটি বিশাল পরিবারের রূপ পরিগ্রহ করেছে।

 

শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন এবং উচ্চতর গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিনগুলোতে আরো কার্যকর অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ও জাতি বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অপরিসীম। যদি রেংকিং এর ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হতো তাহলে হয়তো দেখা যেতো পৃথিবীর সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান অনেক ওপরে থাকতো। দীঘ সাড়ে চার ঘন্টা ব্যাপি আলোচনা সভা ছাড়া ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন গৌরী চৌধুরী, ডঃ শ্যামল কান্তি চৌধুরী, রিপা রকীব, নাদিয়া লোদী ওয়াহাব, কাজী কল্পনা, অমল পোদ্দার, তামান্না ইকবাল, সাঈদা চৌধুরী, সৈয়দ জুবায়ের, কনক বর্মা, স্যামুয়েল চৌধুরী, বেলাল রশিদ প্রমূখ। কবিতা আবৃত্তি করেন ডক্টর হাসনীন চৌধুরী, সৈয়দ আহমেদ ইকবাল, ব্যারিস্টার মুয়িদ খাঁন ও ব্যারিস্টার এম কে হাসান।

 

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন মোস্তফা কামাল মিলন, ব্যারিস্টার মাহরুন আহমেদ মালা,সুপ্রভা সিদ্দিকী, শিশু শিল্পী আলমির,রিমঝিম,ও প্রিয়স।সার্বিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্যা ইউ কের সকল সদস্যবৃনদসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা।

Spread the love