ছাত্রীদের ওড়না নিয়ে অপপ্রচার!

প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০

ছাত্রীদের ওড়না নিয়ে অপপ্রচার!

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

ছাত্রীদের ওড়না নিয়ে অপপ্রচার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়া  এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করাসহ বিভিন্ন অপরাধে ভূইফোঁড় অভিভাবক ঐক্য ফোরামের কথিত সভাপতি জিয়াউল কবির দুলুকে গ্রেফতার করেছে মতিঝিল থানা পুলিশ। । মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রেস কোড পরিবর্তন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।৭ জানুয়ারি রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয় । গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন মতিঝিল থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আশরাফ।

 

এর আগে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গকে নিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে অপপ্রচার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করায় ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলায় দুলুকে গ্রেফতার করা হয়। সেই দফায় কয়েকমাস জেল হাজতে ছিলেন। পরে জামিনে বের হয়ে আসেন। মামলাটি চলমান। এর আগে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে দুলুর বিরুদ্ধে আিইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় আরেকটি মামলা করেন ছাত্রলীগের সাবেক একজন নেতা। সেই মামলায় দুলু চার্জশীটভুক্ত আসামী। বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

 

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় জিয়াউল কবির দুলু ও তার সঙ্গী মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ মানিক, মো. সওগাতুল আলম শওকত ও শ্যামলী আক্তার শিমু নামের এক অভিভাবককে আসামি করা হয়।
ছবি: কথিত অভিভাবক ফোরামের স্মরণিকা।

 

সম্প্রতি মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রেস কোড পরিবর্তন করে টুপি, স্কার্ফ ও বড় ওড়না ঐচ্ছিক করা হয়। এরপরই অভিভাবকদের একাংশ ছেলেদের টুপি, মেয়েদের ওড়না ও স্কার্ফ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে আন্দোলন করেন। এই ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুক্রবার মামলা হলে দুলুকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিক্ষোভের সময় প্রতিষ্ঠানের ড্রেস কোড পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে সোশাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তিসহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানহানীকর তথ্য প্রচার করে আন্দোলনকারীরা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করা হয়।

 

গ্রেফতারের পর দুলুকে সর্বাত্মক সহয়তাকারী সংবাদপত্রের কার্ড ও টেলিভিশনের বুমধারী কতিপয় শিবিরকর্মী আতংকে রয়েছে বলে জানা যায়। গত কয়েক বছরে দুলুর মাধ্যমে ভিকারুননিসা নূন ও আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের একটি চক্র গড়ে উঠেছে। দুলুর ছেলেকে একটি কোচিং সেন্টারে ফাউ পড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। ফাউ পড়ানোর তথ্য ফাঁস করায় সম্প্রতি দুলু ওই কোচিং সেন্টারের মালিককে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। দুলুর মেয়েকেও কোচিং সেন্টারে ফাউ পড়ায়। আবার এই দুলুই কোচিংয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আবার কোচিং সেন্টার থেকে চাঁদা নিয়ে স্মরণিকা প্রকাশ করে। সেই স্মরণিকায় শিবিরপন্থী শিক্ষা সাংবাদিকরা সাম্প্রদায়িক উপাদানে ভরপুর প্রবন্ধ লেখেন। স্মরণিকার কপি দৈনিক শিক্ষার হাতে রয়েছে।

 

এদিকে দুলুর গ্রেফতারের খবরে আতংকিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কয়েকজন অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, সহকারি সচিব, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পিও। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের দুই ব্যক্তিও আতংকে রয়েছেন বলে জানা যায়। তারা বিভিন্ন সময়ে দুলুকে তথ্য ও উসকানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করায় সহায়তা করেছেন।

Spread the love

আর্কাইভ

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031