সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
জেলা প্রতিনিধি/মৌলভীবাজারঃঃ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন বধ্যভূমি থেকে লাউয়াছড়া বনের প্রবেশমুখ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা ও আশপাশের এলাকা হয়ে উঠেছে অপরাধীদের অভয়রাণ্য। দিনের বেলা সেখানে পর্যটকসহ শতশত মানুষের আনাগোনা থাকলেও সন্ধ্যার পর পরই ওই রাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় নেমে আসে সুনসান নীরবতা এবং শুরু হয় মাদকসেবী ও অপরাধীদের আনাগোনা।
গত এক মাসে এখানকার চা বাগানে ঘটেছে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা। এছাড়াও বিগত তিন বছরে আরও কয়েকটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটছে ।এলাকার সচেতন জনগণের দাবী করে বলেন প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি আমরা যাতে এই এলাকার যুব সমাজকে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড থেকে ফিরিয়ে সু পথে আনার জন্য সচেতনতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারি শহরের ভিক্টোরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ইব্রাহীম মিয়া রকিকে তার বন্ধুরা ভানুগাছ সড়কে ভুড়ভুরিয়া চা বাগানের ভেতরে নিয়ে হত্যা করে এবং ৭ ফেব্রুয়ারি একই জায়গায় শহরের এক কিশোরীকে চা বাগানের দুই পাহারাদার ও টমটমচালক মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
একই সড়কে ২০১৭ সালে বেলতলী নামক জায়গাতে দিনের বেলায় বিকাশ এজেন্টের ২০ লাখ টাকা ছিনতাই করে ছিনতাইকারীরা। এর পর ২০১৮ সালে সন্ধ্যায় একই স্থানে সড়কে গাছ ফেলে দুর্বৃত্তরা পর্যটকদের গাড়িতে গণডাকাতি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের শনাক্ত করলে দেখা যায়, এসব ঘটনার সঙ্গে বহিরাগতদের সঙ্গে স্থানীয়রাও জড়িত। বর্তমানে চা বাগানগুলো মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে শহরতলির আশপাশের চা বাগানে গ্রাম থেকে মাদকসেবীরা মাদক কিনতে ও বিক্রয় করতে এসে ভিড় জমায়।
অনেকেই মনে করছেন, এসব মাদকসেবীর দ্বারাই ছোট-বড় নানা অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে। সম্প্রতি এসব ঘটনায় পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদিও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি টিম গঠন করা হয়েছে; কিন্তু ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম শুধু দিনের বেলায় লাউয়াছড়া বনের ভেতরে দেখা যায়। সচেতন মহলের দাবি, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের টহল কার্যক্রম জোরদার করা।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলাটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত। দেশের ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে ৪০টি চা বাগানই এই উপজেলায় অবস্থিত। প্রতিদিন এখানে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক প্রকৃতির সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া বনসহ নানা দৃশ্যাবলি দেখতে আসেন।