সিলেট ২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
বিজয় রায়/ সুনামগঞ্জঃঃ
ছাতকে রেলওয়ে বিভাগের অনিয়ম-দূর্নীতি এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। এখানের রেল বিভাগের ধারাবাহিক অব্যবস্থাপনার কারনেই দিনে-দিনে দূর্নীতি ও লুটপাট বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকটা অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলছে এখানের রেলওয়ে, রোপওয়ে ও কংক্রিট স্লীপার কারখানা।
এখানের রেল বিভাগে বেশ ক’জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, যারা নিয়মিত অফিস না করেই মাসের পর মাস সরকারী বেতন-ভাতা ভোগ করে যাচ্ছেন। আর তাদের কমিশনে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এখানের দূর্নীতি-অনিয়ম ছাইচাপা আগুনের মতো ওপেন সিক্রেট হয়ে চলছে। রেলওয়ের অবসর প্রাপ্ত এসএসই(ইলেক) মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে গোপনে রেলওয়ের মালামাল বিক্রি করে লাখ-লাখ টাকা আত্মসাতের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
২০১৬ সালে রেলওয়ের শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগে প্রায় ২ কোটি টাকা মুল্যের মালামাল চোরাই পথে বিক্রি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী(পথ) পূর্ব রমজান আলী এ বিষয়ে সরজমিন তদন্ত সাপেক্ষ প্রায়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০১৬ সালের ২১ আগষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ছাতক বাজারকে লিখিত নির্দেশ দেন। কিন্তু বিগত প্রায় ৩ বছরেও এ ব্যাপারে কোন উল্লেখযোগ্য তদন্ত বা আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
আর এদিকে যার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তিনি গত বছরের ৪ ডিসেম্বর চাকুরী জীবন শেষ করে অবসরে চলে গেছেন। এর আগে ২০১৪ সালে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটের সহকারী পরিচালক সালাউদ্দিন এখানের রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের জন্য রেকর্ড পত্র প্রেরনে ছাতক রেলওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে চাওয়া হলেও তা প্রেরন করা হনি। ফলে দুদকের তদন্ত কার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে বলে এ পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্রে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ, রজ্জুপথ ও স্লীপার কারখানার স্ক্যাপ মালামাল বিক্রি ও বিভিন্ন টেন্ডারে অনিয়ম এবং সরকারী টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। রেলওয়ের লাইনম্যান দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে রেলওয়ের একাধিক বাসা দখলে রেখে ভাড়া ভোগ করার অভিযোগ রয়েছে। তার নামে বরাদ্দকৃত ছাতক রেলওয়ের বিআর-৬বি(এ টাইপ) বাসটি ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল লিখিতভাবে বাতিল দেখিয়ে বিআর-৯ডি বরাদ্দ নেয় সে। কিন্তু এ দুটি বাসাসহ মোট ৪টি বাসা সে নিজের দখলে রেখে বে-আইনীভাবে ভোগ করে যাচ্ছে।
ছাতকে রেল ষ্টেশন মাষ্টার আব্দুল মতিন ভুঁইয়া কর্মস্থলে না এসে তার ব্যক্তিগত লোক বসিয়ে ষ্টেশন মাষ্টারের কাজ করানো হচ্ছে। এ ই এন (বিআর) মুজিবুল হক কর্মস্থলে অনিয়মিত এবং পরিবারের সাথে সিলেটে বসাবাস করলে ছাতকে তার নামে রয়েছে বিআর-২৬-সি স্পেশাল জেড টাইপ বাসা। এখানের রেলওয়ের তিনটি বিভাগেই রয়েছে কম বেশী অনিয়নম-দুর্নীতি। লাইনম্যান দেলোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে অবসর প্রাপ্ত এস এস ই (ইলেক) মোখলেছুর রহমান জানান, অবসর নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে রেলওয়ের কতিপয় ব্যক্তি। এ ই এন (বিআর) মুজিবুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়