সিলেট ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
বিজয় রায়/ছাতকঃঃ
ছাতকে সরকারী জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য আহরনের হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিনই উপজেলার কোন না কোন এলাকায় পাম্প দিয়ে জলাশয়ের পানি শুকিয়ে মাছ আহরনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মৎস্য আইন বিরোধি এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আইনী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় জলাশয় শুকিয়ে মাছ আহরণ ও মাছের বংশ ধ্বংস করে যাচ্ছে এক শ্রেনীর অমৎস্যজীবি মানুষ।
ফলে প্রাকৃতিক মাছের বিভিন্ন প্রজাতী ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। সাধারন মানুষের অভিযোগ, জলাশয় শুকিয়ে মাছ আহরণের বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করে কোন লাভ হচ্ছে না। প্রতি বছরই জলাশয় শুকিয়ে মৎস্য আহরণের ঘটনা ঘটছে এখানে।
এখন পর্যন্ত মৎস্য আইন বিরোধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জলাশয় শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করলে একদিকে যেমন মাছর বংশ ধ্বংস হচ্ছে, অন্যদিকে আশাপাশের বোরো ফসলে পানি সেচের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। পানি শুকিয়ে মাছ ধরা এবং জলমহাল সাব-লিজের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সরকারী আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে এক শ্রেনীর প্রভাবশালী এসব কাজে লিপ্ত রয়েছে। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের কৃইয়াদল গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় সরকারী কুইয়াদল জলাশয় ও মাছ প্রজননের একটি অভয়াশ্রম রয়েছে।
১৪২৬ থেকে ১৪২৮ বাংলা ২ বছরের জন্য কৈয়াদল মৎস্য সমবায় সমিতির নামে সরকারীভাবে লিজ গ্রহন করা হয়। গত কয়েকদিন ধরে কুইয়াদল জলমহালে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে জলমহালটি শুকিয়ে ফেলা হচ্ছে। মৎস্য আইন অমান্য করে প্রকাশ্যে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরার প্রক্রিয়ায় লিপ্ত রয়েছে অমৎস্যজীবি এ মহলটি।
সোমবার দক্ষিন কুপিয়া গ্রামের আব্দুল মনাফের পুত্র নাছির আলী গ্রামবাসীর পক্ষে কুইয়াদল জলাশয় শুকিয়ে মৎস্য আহরণ বন্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইতিমধ্যেই মাছের অভয়াশ্রম শুকিয়ে মাছ ধরে অভযাশ্রমটি নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এখন কুইয়াদল সরকারী জলাশয়ে পাম্প বসিয়ে দিন-রাত্রী চালু রেখে পানি শুকিয়ে ফেলা হচ্ছে।
এতে করে এলাকার আশপাশের বিপুল পরিমান বোরো ফসল পানি সেচের কারনে হুমকীর মুখে পড়েছে। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারী কুইয়াদল গ্রামের মৃত মবশ্বর আলীর পুত্র বাতির আলীও একই অভিযোগে পৃথক আবেদন দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবির তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনসহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত দে। এ ছাড়া দোলারবাজার ইউনিয়নের মঈনপুর কুড়া-চাতল বিল, গর্জনী বিল, জাহিদপুর পাঁচবিলা বিল, বলের হাওর, সনাই বিলসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারী জলাশয়ের মৎস্য আইন অমান্য করে পানি শুকিয়ে মৎস্য আহরণের খবর পাওয়া গেছে।