পাপিয়ার ‘পাপের নেটওয়ার্কের খোঁজে সিলেটে পুলিশ -গোয়েন্দা

প্রকাশিত: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২০

পাপিয়ার ‘পাপের নেটওয়ার্কের খোঁজে সিলেটে পুলিশ -গোয়েন্দা

 

স্টাফ রির্পোটারঃঃ

দেশ কাঁপানো যুব মহিলালীগের বহিস্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ‘পাপের নেটওয়ার্কের’ খোঁজে নেমেছে সিলেটের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। পাপিয়ার অস্ত্র ব্যবসার সাথে সিলেটের কারা জড়িত ছিল সেটি খুঁজে বের করতে সিলেটজুড়ে কাজ করছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের বিশেষ টিম। গ্রেফতারের পর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র এনে ব্যবসার কথাও জানিয়েছিল পাপিয়া। সিলেটের এক বড় ব্যবসায়ীর সাথে তার দহরম মহরম সম্পর্ক থাকার কথাও জানিয়েছিল তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে।

 

গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিদেশ পাড়ি জমানোর সময় শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া। পরে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ টাকা, ডলার ও মূল্যবান জিনিসপত্র। উঠে আসে নারী ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের কাহিনী।

 

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া জানিয়েছে সে অস্ত্র ব্যবসার সাথেও জড়িত। এ ব্যাপারে সে দিয়েছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।

 

তার অপকর্মের অন্যতম সহযোগী রাকিব ও সুমনকে দিয়ে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আনাতো বলেও জানিয়েছে পাপিয়া। ভারত থেকে আনা অস্ত্রের মধ্যে ছিল রিভলবার, একে-২২ ও কাটা রাইফেল। পরে ওই অস্ত্র পৌছে দেওয়া হতো ঢাকার একাধিক ডিলারের কাছে। ডিলারের মাধ্যমেই বিক্রি হতো এই অস্ত্র। অস্ত্র কেনাবেচার পুরো কাজটাই দেখভাল করতেন পাপিয়া নিজেই।

 

পাপিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ব্যবসার এই তথ্য পাওয়ার পর মাঠে নেমেছে সিলেটের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। কানাইঘাটের কোন সীমান্ত দিয়ে কাদের মাধ্যমে পাপিয়ার নেটওয়ার্ক অস্ত্র আনতো তার সন্ধানে নেমেছে তারা। এতোদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের কাছে তথ্য ছিল সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসার।

 

কয়েকবার সফল অপারেশন চালিয়ে কয়েকজন অস্ত্র ব্যবসায়ীকেও ধরেছিল তারা। কিন্তু কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসার তথ্যটি তাদের কাছে একেবারেই নতুন। তাই অস্ত্র ব্যবসার তথ্য উদঘাটনে সীমান্ত এলাকায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।

 

এছাড়া পাপিয়া জানিয়েছে সিলেটের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরেই সে অস্ত্র ব্যবসায়ী জড়িয়েছিল। ওই ব্যবসায়ীরও পরিচয় সনাক্তে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাপিয়ার সহযোগী রাকিব ও সুমন সিলেট আসলে কোথাও ওঠতো, কাদের সাথে সম্পর্ক ছিল এসব তথ্যের সন্ধান বের করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। এক্ষেত্রে সিলেটের চিহ্নিত ও পুরনো অস্ত্র ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারীদের দিকে বিশেষ নজর রাখছে তারা।

 

এ ব্যাপারে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ‘অপরাধমূলক যে কোন কর্মকান্ডের খবর পেলে পুলিশ খোঁজ খবর নেয়। পাপিয়া কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আনার যে তথ্য দিয়েছে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর আগে কখনো এই সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসার খবর মিলেনি। পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়টি তদন্ত করছে। সিলেটে পাপিয়ার কোন নেটওয়ার্ক ছিল কি-না এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Spread the love