সিলেট ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২০
কলি বেগম,জগন্নাথপুরঃঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এখনো বিলুপ্ত প্রায় গবাদি পশুর বন্দিশালা (গরুর খোয়ার) এর কদর রয়েছে। উপজেলার হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এখনো গরুর খোয়ার আছে। লোকজন খোয়ারে এনে গরু দিচ্ছেন। কারো গরু যদি অন্যের ধান খেয়ে ফেলে অথবা কোন ক্ষতি সাধন করলে ক্ষতিগ্রস্তরা উক্ত গরুকে নিয়ে স্থানীয় খোয়ারে দিয়ে আসেন। খোয়ার হচ্ছে গরুর বন্দিশালা।
এখানে গরু আটকে রাখা হয়। দীর্ঘক্ষণ গরুকে কোন ঘাস খেতে দেয়া হয় না। এটাই গরুর শাস্তি। দিন শেষে সন্ধ্যা হয়ে আসলে উক্ত গরু মাঠে না পেয়ে অথবা রাখাল গরুকে নিয়ে বাড়ি না ফিরলে গরুর মালিক গরুর সন্ধানে ছুটে আসেন খোয়ারে। খোয়ারে এসে গরু পেলে মালিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে এবং প্রত্যক গরুর জন্য ১০০ টাকা করে জরিমানা দিয়ে গরু ছাড়িয়ে নিয়ে থাকেন। খোয়ারের মালিক স্থানীয় ইউনিয়ন অফিস থেকে লীজ নিয়ে বাঁশ দিয়ে ঘুরিয়ে খোয়ার তৈরি করেন।
রাতে কোন গরু খোয়ারে থাকলে চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে খোয়ারি রাত জেগে পাহারা দিয়ে থাকেন। এছাড়া টানা কয়েক দিন গরু খোয়ারে থাকলে ঘাস খেতে দেয়া হয়। এতে গরুর জরিমানা আরো বেড়ে যায়। এভাবেই যুগযুগ ধরে চলছে। তবে এক সময় গরুর খোয়ার খুবই জমজমাট থাকলেও বর্তমানে দিনে দিনে গরুর সংখ্যা কমে যাওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গরুর খোয়ার।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই বাজারের পাশে রয়েছে একটি গরুর খোয়ার। খোয়ারে বন্দি রয়েছে ৩টি গরু। চারদিকে খোঁজেও পাওয়া যায়নি খোয়ারিকে। এ সময় স্থানীয়রা জানান, খোয়ারের মালিক এক মহিলা। তবে প্রতিটি গরু খোয়ারে যারা এনে দেয়, তাদেরকে খোয়ারি দিয়ে থাকেন ৩০ টাকা। আবার গরু ছাড়িয়ে নিতে এলে মালিকদের কাছ থেকে রাখা হয় ১০০ টাকা জরিমানা।