গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের এর বৃত্তি বিতরণ

প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২০

গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের এর বৃত্তি বিতরণ

প্রতিনিধি/গোলাপগঞ্জঃঃ

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন, সরকার শিক্ষার জন্য ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের সাথে সবাই একযোগে কাজ করতে পারলে দেশর সার্বিক উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে যাবে। প্রবাসে থেকেও ট্রাস্টের সদস্যরা দেশে শিক্ষার উন্নয়নে যে অবদান রেখে যাচ্ছে তা আমাদের জন্য অত্যান্ত গৌরবের।

 

যুক্তরাজ্য ভিত্তি শিক্ষা উন্নয়নমূলক সংগঠন গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে এর উদ্যোগে বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় লক্ষীপাশা ইউনিয়নের মুরাদিয়া ছবুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে আয়োজিত বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের সভাপতি মো. আলতাফ হোসাইন বাইস।

 

গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে এর সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী রুহুল এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগরে সভাপতি এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপজেলার ৩৮ টি স্কুল ও ৭টি মারাসার প্রায় ৫শতাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ২২ লক্ষ টাকার বৃত্তি বিতরণ করা হয়।

 

প্রধান অতিথি আরো বলেন, সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন, বই বিতরণ, জাতীয়করণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমর মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। সরকার শিক্ষাকে প্রথম ও প্রধান জাতীয় কাজ হিসেবে গ্রহণ করেছে।

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ মনসুর আহমদ চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ উপজেলা এডুকেশন টাস্ট ইউকের ট্রেজারার জবরুল ইসলাম লনি,গোলাপগঞ্জ রনকেলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী রিংকু, ট্রাস্ট্রের ট্রাস্টি সাহিত্যিক ও কবি ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্পপতি সিরাজুল ইসলাম, , মেম্বারশীপ সেক্রেটারী নুনু মোহাম্মদ শেখ, মুরাদিয়া ছবুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান, লক্ষিপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন।

 

প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর আমরা ভেবে ছিলাম মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু পাকিস্তানীরা আমাদের আবারো শোষন করতে শুরু করে। পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের কোটি কোটি সরনার্থীদের খাদ্য ক্রয়, যুদ্ধের জন্য অস্ত্র সরবরাহে প্রবাসীরা দুই হাতে সাহায্য করে গেছেন। বিশেষ করে আমাদের লন্ডন প্রবাসীরা মুক্তিযুদ্ধে যে সাহায্য সহযোগিতা করেছে তা স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।

 

তিনি বলেন, প্রবাসীরা এখনো তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে। তাদের রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে তারা বিরামহীন অবদান রেখে যাচ্ছেন।
তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের দক্ষতা ও দৃঢ়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, দুর্নীতি কথা বলে বিদেশীরা আমাদের পদ্মা সেতুতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু শেখ হাসিনা বললেন জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু হবে। অনেকে বলেছেন আমরা ব্যর্থ হবো। কিন্তু আমরা বাঙ্গালী জাতি, আমাদের মেহনতি মানুষের ট্যাক্স ভ্যাটের টাকা দিয়ে সকল জল্পনার অবসান করে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান।

 

তিনি বলেন, ২০২০ বঙ্গবন্ধুর সাল, বাঙ্গালির সাল। কোন চক্রান্ত আমাদের বিভ্রান্ত করতে পরবো না। এই ধারায় আমরা ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে আতœপ্রকাশ করবো। দেশের এই উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি না করতে তিনি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে শতর্ক করে দেন।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, প্রত্যেকে অনন্য প্রতিভার অধিকারী। একটি লক্ষ্য নিধারণ করে চেষ্টা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোন কেউ তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে। এই বৃত্তি প্রাপ্তি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেনিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

তিনি শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শিক্ষকরা আন্তরিতার সাথে পাঠদান করলে এবং অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রতি নজর রাখলে শিক্ষার্থীরা সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। আগামী প্রজন্মকে বিশ^ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এসময় উপস্থিত ছিলেন, ট্রাস্টের টাস্টি ছালেহ আহমদ, বাংলাদশে ব্যাংক সিলেটের যুগ্ম পরিচালক জাবেদ আহমদ, সমাজসেবক ও রাজনীতিবীদ এমরান আহমদ চৌধুরী, বুধবারি বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাব উদ্দিন কামাল, গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল হক এনাম, সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহেদুর রহমান জাহেদ, সাবেক ছাত্রনেতা হোসেন আহমদ, অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তারা বক্তব্যে এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। সরকারের একার পক্ষে শিক্ষার উন্নয়ন করা সম্ভব হতো না, যদি না প্রবাসীরাসহ সকলে সহযোগিতা না করতেন।

 

তিনি বলেন, নানা জটিলতার জন্য প্রবাসীরা দেশে আসতে চান না। ফলে প্রবাসী বিনিয়োগ কমে গেছে। প্রবাসীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারলে প্রবাসী বিনিয়োগ এবং পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

 

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব বলেছেন, প্রবাসীরা আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধা। অর্থনীতির পাশাপাশি দেশের শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তারা ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সৃজনীর প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, শাহজাহান আহমদ টিপু, সাদিকুর রহমান চৌধুরী, আরিফ কাদির প্রমুখ। শুরতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আব্দুর রহিম চৌধুরী রিপন।

Spread the love